সুইমিং পুলটাও কী সুন্দর। ভরাট চাঁদটা
পুলের স্বচ্ছ জ্বলে সাঁতার কাটছে।
রেস্তোরার সেন্ট্রাল রুমের স্বচ্ছ
কাঁচের দেয়াল দিয়ে বাইরে
তাকিয়ে ছিল ওরা। এখানেই বসা
যাক। কী সুন্দর ভিউ!
নাহ আনিস, আমরা ঐ পাসটাই বসব।
অনিতা আপত্তি জানায়।
ভিউটা দেখ বেবি, সো নাইস।
এখানে বসলে হৃদয়ে ভালোবাসা
এমনিতেই জেগে উঠবে। গুলশানে নয়
সুইজারল্যান্ডের কোনো সী বিচ
কটেজে এসেছি মনে হচ্ছে। অনিতা
বেবি তোমার পছন্দের প্রশংসা না
করে পারছি না। ডেটিং-এর জন্য
জায়গাটা পার্ফেক্ট।
আনিস প্লিজ, একটা বিশেষ কারণে
এখানে বসতে পারছি না। অনিতার
সুন্দর নীল চোখ দুটোতে সামান্য রাগ
আর বিরক্তি।
এবার আনিস নরম হল। আগে বল কেন?
তারপর যাচ্ছি।
নো নেভার। আগে চলো ঐ কোণায়
গিয়ে বসি তারপর বলছি।
ওকে বেবি। আনিসকে হার মানতেই
হল।
কোণার একটা টেবিলে গিয়ে বসল
তারা। হোটেলের টেবিলগুলো
প্রায় ফাঁকা। দুয়েকটি টেবিলে
ছড়ানো ছিটানো কিছু কলেজ-
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে
বসে আছে। তাদের বেশিরভাগ
প্রেমিক জুটি অথবা নবদম্পতি।
আনিসদের টেবিলের মাঝ বরাবর
একটা সিরামিকের বিশাল
ফুলদানি। তাতে লাল হলুদ নীল
সাদা… গোলাপ। ওখান থেকে
আনিস একটা লাল গোলাপ নিয়ে
অনিতার সামনে বেশ কায়দা করে
ধরল। বিউটি ফুল লেডির জন্য বিউটি
ফুল রোজ।
থ্যাংক ইউ। প্রথমেই লাল গোলাপ।
অনিতা গোলাপটা নাকের কাছে
আনতেই তার ভেতর থেকে- হাঃ
ছিঃ! একটা হাচি বেরিয়ে এলো।
তুমি রাগলে যেমন সুন্দর দেখায়-
হাঁচি দিলেও ঠিক তেমনি সুন্দর
দেখায়। আনিস মন্ত্রমুগ্ধের মত
অনিতার দিকে তাকিয়ে থাকে।
হরিণের মতো টানা টানা চোখ
দুটো অনিতা টেবিলের কোণায়
স্থির করে রাখে- যেন আনিসের
কথায় লজ্জা পেয়েছে।
সেদিন ডিজে পার্টির নিবু নিবু
লাল-নীলবাতির আলোতে তোমার
প্রাণ খোলা হাসি দেখে আমি তো
দু’রাত ঘুমুতে পারিনি। আনিস বলে।
এখন ঘুম হচ্ছে তো? জানো তো মানুষ
না খেয়েও দশ দিনের বেশি বাঁচতে
পারে কিন্তু না ঘুমিয়ে নয়।
সেই ভয়েই তো আছি। ফেসবুকের
প্রোফাইলে তোমার ছবিটা যখন
দেখি, আমি তো একেবারে টাসকি
খেয়ে গেছিলাম। আমার ভেতর
থেকে কে যেন বলে উঠেছিল, ইউ আর
ইন লাভ!
সে তো আমার ছবি ছিল না।
ঐ তো তোমার নূপুর পরা দুটি পা।
শাড়িটা হাঁটুর সামান্য নিচ পর্যন্ত
তোলা। আমি ভাবলাম, যার চরণ দুটো
এত সুন্দর সে না জানি কত সুন্দর! আর
টাইমলাইনে ঢুকে যেদিন তোমার
ছবির খোঁজ পেলাম, আমি সেদিন
থেকে আমি পুরাই ম্যাড। ও বেবি
তুমি যে কত সুন্দর। ইউ আর মোস্ট
বিউটিফুল গার্ল আই ইভার সিন! এই
কথাগুলো অনেক বার অনিতাকে
বলেছে আনিস। ফেসবুকে,
স্কাইপিতে আর সেদিনের ডিজে
পার্টিতে। তবুও বার বার বলতে ইচ্ছে
করে- অনিতাও বেশ আনন্দের সাথে
শোনে।
সত্যি, অনিতা দেখতে একটা নিখুঁত
বার্বি ডল। মৃগনয়ন দুটো হৃদের জলের মত
স্বচ্ছ- কী যে মায়া ভরা! চোখের
পলক দুটো প্রতি পলকে পলকে যেন
প্রেমের কবিতা পড়ে। গায়ের রঙে
গোলাপি আভা- আধা কাঁচা
পেঁপের মত। সিল্কি চুলগুলো ঝলমল
করে কাঁধের উপর। ঠোঁট দুটো
স্টবেরির মতো লাল চকচকে। সেদিন
ডিজে পার্টিতে টি শার্ট আর
জিন্স পরে এসেছিল অনিতা। আজ
পড়েছে সবুজ জর্জেট শাড়ি সাথে
ম্যাচ করে স্লিভলেস ব্লাউজ। ঐদিন
ডিজে পার্টিতে তাকে দেখে
আনিসের এক ধরনের উগ্র মুগ্ধতা সৃষ্টি
হয়েছিল- অবশ্য সেটা কয়েক পেগ
হুইস্কি খাবার কারণেও হতে পারে।
আজ একধরনের রোমান্টিক অনুভূতি
জাগছে আনিসের ভেতরে। যদি
সমুদ্রের কিনারে বসে আঙুলের
খাঁজে আঙুল রেখে, ওর মসৃণ গালের
জমিনে নিজের খসখসে গাল
মিশিয়ে সূর্যাস্ত দেখা যেত তবে
আনিস হত পৃথিবীর সেরা সুখী মানুষ।
অনিতাকে নিয়ে সত্যি কি তার
বাসর গড়ার স্বপ্ন সত্যি হবে না?
ওয়েটার এসে আনিসের পাশে
দাঁড়িয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। সেদিকে
খেয়াল ছিল না আনিসের- সে তো
অনিতায় মুগ্ধ। এই অনিতা তুমি বল কী
খাবে। আমি তো এখানে আগে
আসিনি, এখানকার কোনটা বেস্ট
আমি বলতে পারব না। তাছাড়া
আমি তো হোস্ট।
জানো এখানকার টুনা মাছের
সালাদ ভীষণ ডেলিসিয়াস।অনিতা
সামান্য এগিয়ে এসে ফিস ফিস করে
বলে, সী শেলের অনেক ধরনের মেন্যু
আছে এখানে? খাবে?
তুমি খাও? আনিসের চোখে বিস্ময়।
তাতে কী? আমার তো ভীষণ পছন্দ।
তোমার যখন এত পছন্দ আমি চেষ্টা
করে দেখতে পারি। ওয়েটার ওয়েট
করতে করতে বিরক্ত।
এখানকার স্পেশাল কী অনিতা?
আনিস জিজ্ঞেস করে।
ওয়েটার আগ বাড়িয়ে নিজেই বলে,
আমাদের সিচুয়ানের স্পেশাল
আইটেমগুলো কাস্টোমারদের ভেরি
ফেভারিট।
আজ আর সিচুয়ান না। অনিতা বলে,
বার বার আপনাদের এই সিচুয়ান
খেয়ে খেয় বোর হয়ে গেছি।
তবে ম্যাডাম, আপনার পছন্দের
লবস্টারের স্পেশাল স্যুপ আনি?
ওকে। সাথে টুনা সালাদ।
ড্রিংক্সটা পরে অর্ডার করছি। আর
শুনুন- ওয়েটার চলে যেতে উদ্যত হলে
অনিতা বলে, দুটো ক্রিম কেরামেল।
ওয়েটার যাবার পর আনিস বলে, আজ
তোমাকে একটু অস্থির মনে হচ্ছে
বেবি?
কেন সোনা?…
আজ আনিসের অনিতার সাথে
সেকেন্ড ডেটিং। প্রথমটা ছিল
একটি ফাইভ স্টার হোটেলের ডিজে
পার্টিতে। অবশ্য অনিতার পিছনে
লেগে আছে আনিস সাত মাস, চৌদ্দ
দিন, আট ঘণ্ট। ফেসবুকে হঠাৎ
অনিতার প্রফাইল চোখে পড়ে তার-
আনিসের বন্ধু তারেক মিউচুয়্যাল
ফ্রেন্ড ছিল তাদের। রীতিমত সে
অনিতার জন্য পাগল হয়ে যায়। অবশ্য
আনিসের মেয়ে পটানোর
এক্সপেরিয়েন্স অনেক পুরনো।
মেডিক্যাল কলেজর প্রথম বর্ষ থেকে
শুরু করে আজ পর্যন্ত টিস্যু পেপারের
মতো সে গার্লফ্রেন্ড বদলেছে। দুবছর
হল ইন্টার্নি শেষ করে ঢাকার একটি
নামিদামি বেসরকারি
হাসপাতালে চাকরি করছে। এখন সে
এক মেয়েতে থিতু হতে চায়- আদর্শ
স্বামী হিসেবে সংসার জীবন শুরু
করতে চায়। সকালে যদি অনিতার
মতো একটা শুভ্র কুসুম মিষ্টি বউ
রাতের দুষ্টুমি ধুয়ে ভেজা চুলে
হাতে এককাপ গরম চা নিয়ে
গুডমর্নিং বলে তার ঘুম ভাঙায় তবে
জীবনে চাওয়া পাওয়ার ষোল আনা
পূর্ণ হয়। ‘অহ সোনা! তোমার সাথে
আগে কেন যে পরিচয় হলো না?’
উচ্ছ্বসিত আনিস টেবিলের উপর
গুছিয়ে রাখা অনিতার হাতটা আলত
করে ধরতে গেলে সে খানিকটা
চমকে যায়। সে আনমনে বারান্দার
পাশে বসে থাকা উস্কখুস্ক লোকটির
দিকে বার বার তাকাচ্ছিল। ‘সোনা
কী হয়েছে তোমার বলো তো? আমি
বার বার লক্ষ করেছি, ইউ আর নট উইথ
ইউ? আনিস এবার জোর দিয়ে
জিজ্ঞেস করে।
ব্যাপারটা তেমন কিছু না।
নাহ, সামথিং রঙ।
আসলে আমি যে এনজিওতে চাকরি
করি সেখানে তিন মাস ধরে
স্যালারি দিচ্ছে না।
টাকা দরকার? সেটা আমাকে বল। এর
জন্য তুমি মন খারাপ করে বসে আছো।
আমাদের সুন্দর সন্ধ্যাটা নষ্ট করছ? দিস
ইজ আনফেয়ার অনিতা।
টাকা তো দরকার হলে তোমার
কাছে চেয়ে নিব কিন্তু কাজ করব,
স্যালারি পাব না এটা কি ঠিক?
সমস্যাটা কোথায় সেখানে?
আমাদের সব চেয়ে বড় ফান্ডটা আসে
ইউএসএ’র একটা সোর্স থেকে। কিন্তু
ওরা হঠাৎ করে টাকা পাঠানো বন্ধ
করে দিয়েছে।
-কেন?
-অফিস তো বলছে বাংলাদেশে
পলিটিক্যাল সিচুয়েশন,
ফান্ডামেন্টালিস্টদের হঠাৎ
তৎপরতা বেড়ে যাওয়া… এসবে
বিদেশী ডোনাররা বিরক্ত। কিন্তু
আমি জানি আসল খবর- বার্ষিক
অডিটে এসে ওরা ফান্ড তসরুপ করার
বিষয়টা আঁচ করতে পেরেছে।
সব সেক্টর অসৎ লোকে ভরে আছে।
বাঙালির মোরালিটি একেবারে
কোণায় গিয়ে পৌঁছেছে। তারপরও
যে দেশটা কীভাবে টিকে আছে
সেটাই ভাবি।
আসলে কি জানো আমরা
পাশ্চাত্যের খারাপটা নেই আর
ভালটা বর্জন করি।
ডার্লিং ওসব কথা বাদ দাও। খাবার
খেয়ে চলো আমার বাসায় সারা
রাত চুটিয়ে গল্প করব।
বাসায় কেউ নেই?
আমি ঢাকায় একেবারে একা
থাকি। বাবা-মা চট্টগ্রামের
কুলসিতে। সেখানে আমাদের বাড়ি
আছে। এখানে গ্রিন রোডে আমার
ফ্লাট।
সে না হয় বুঝলাম। দ্বিতীয় ডেটিংএ
গার্লফ্রেন্ডকে একেবারে
বাড়িতে নিতে চাইছো। তাও
আবার ফাঁকা বাড়ি!
-ওহ অনিতা। কী যে বল না। কোথায়
তুমি সারাজীবন থাকবে একবার
দেখে নিবে না।
যাব এক দিন।
এরই মধ্যে খাবার চলে এসেছে।
সীফুডের গরম ভাপের মৌ মৌ গন্ধ
আনিসের নাকে সুড়সুড়ি দিচ্ছে।
অনিতা টুনামাছে কামড় দিয়ে গরম
স্যুপে আলতোভাবে চামুচ নাড়তে
নাড়তে বলে, তোমাকে একটা কথা
বলার ছিল। সেদিন ফেবুতে চ্যাট
করতে করতে তোমাকে একটা কথা
বলেছিলাম মনে আছে?
সেদিন মানে গত শুক্রবার?
নাহ, তারও আগে, দিনটা মনে নেই।
কী বলেছিলে? গরম.. . স্যুপটা ঠোঁট
গড়িয়ে আনিসের ফ্রেঞ্চকাট
দাঁড়িতে স্থির হয়। সে টিস্যু পেপার
দিয়ে সেটা মুছে ফেলে। মনে পড়ছে
না। বাট, এখন বল।
তুমি দেখছি সব ভুলে যাও। অনিতা
কৃত্রিম অভিমান তার চোখে-মুখে
ছড়িয়ে দেয়।
-ও সোনা তোমাকে দেখার পর কিছু
মনে থাকে না। আনিস স্যুপ গিলে
উচ্ছাসের সাথে বলে।
শোনা আমি বলেছিলাম…
বলেছিলাম আমার একজন বয়ফ্রেন্ড
আছে মনে ছিল।
কিছুটা স্যুপ আনিসের গলায় আটকে
আবার মুখের দিকে ফিরে আসে। সে
টিস্যু দিয়ে ঠোঁট দুটো চেপে ধরে।
অতঃপর মুখের স্যুপগুলো খুব সাবধানে
গিলে ফেলে। এমন কথা বলেছিলে
নাকি?
-ঠিক ওভাবে বলিনি। তুমি
বলেছিলে তুমি বৃষ্টিতে ভিজতে
ভালোবাসো। আমার সাথে একদিন
বৃষ্টিতে ভিজবে।
হ্যাঁ, নিশ্চয় বলে থাকব। কারণ সত্যি
আমার বৃষ্টি ভীষণ পছন্দ।
আমি উত্তরে কী বলেছিলাম
তোমার মনে আছে?
কী?
বৃষ্টির শব্দ পুরনো বেদনার গান আমার
বুকে জাগিয়ে তোলে- এমন কিছু
বলেছিলাম। আসলে আমি একথাটাই
বলতে চেয়েছিলাম।
কোন কথাটা?
সত্যি কি তুমি বোকা না বোকার
ভান কর?
কেন এমন কথা বলছ সোনা।
আই এম ড্যাম সিরিয়াস! অনিতা
রেগে গেছে যেন।
আমিও। বলো শুনছি। আনিসে
খাবারে মনোযোগ নেই সে
অনিতার কণ্ঠে যেন তার ফাঁসির
রায় শুনতে চলেছে।
তুমি ঐ টেবিলে বসতে চেয়েছিলে।
আমি বসিনি ক্যান জানো?
কেন? আনিসের চোখ দুটো যেন
বেরিয়ে আসবে। তা দেখে অনিতা
একটু বিব্রত হয়।
টেবিলটার কোণার টেবিলে যে
ছেলেটি বসা সে আমার এক্স
বয়ফ্রেন্ড।
বলো কী!
আগে বললে তো অন্য কোনো
হোটেলে গিয়ে বসতাম। এখানেই
বসতে হবে এমন তো নয়।
সত্য থেকে পালিয়ে বেড়ানোর
চেয়ে সত্যের সামনাসামনি হওয়া
আমি বেশি পছন্দ করি। এতে নিজের
কাছে নিজের সম্মান সুরক্ষিত
থাকে।
সেটাই। খুব ভাল বলেছ। আনিসের
গাল রক্তিম হয়ে যায়।
কী খবর সোনা মন খারাপ করলে মনে
হচ্ছে। অনিতা আনিসের গোমড়া মুখ
দেখে বলে।
না।
আমি চাইলে কিন্তু লুকোতে
পারতাম- তা আমি করিনি। কারণ
মিথ্যা দিয়ে একটা সম্পর্কের শুরু
atorvastatin 40mg usa order lipitor 40mg without prescription buy lipitor 10mg sale
order lipitor 10mg pill lipitor 80mg pill order lipitor without prescription
buy ciprofloxacin 500mg online – augmentin 1000mg canada purchase amoxiclav sale
generic ciprofloxacin 1000mg – order bactrim 480mg online order augmentin pill
baycip order – order ciprofloxacin 1000mg pill buy generic augmentin 375mg
zidovudine 300 mg oral – cheap lamivudine 100 mg buy zyloprim generic
order retrovir without prescription – order glucophage 500mg buy allopurinol 300mg pill
order clozapine 100mg – buy frumil pill famotidine 40mg tablet
clozapine 100mg brand – buy frumil 5 mg online buy famotidine online