0
277

আইফোনের মডেল, শুরু থেকে শেষ

সর্বশেষ যে আইফোনটি উন্মুক্ত করেছে অ্যাপল, তার নাম দেওয়া হয়েছে আইফোন এসই। গত ২১ মার্চ অ্যাপল ইভেন্টে উন্মুক্ত করা হয় নতুন আইফোন ও আইপ্যাড।

এ নিয়ে আইফোনের যাত্রা শুরুর পর একে একে নয় বছর পেরিয়ে গেল। এই নয় বছরে ব্যবহারকারীদের যেমন মুগ্ধ করেছে অ্যাপল, তেমনি নিয়ে এসেছে নতুন নতুন প্রযুক্তি।

চলুন দেখে নেওয়া যাক, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আইফোনের সব মডেল কেমন ছিল :

১. অ্যাপল আইফোন

দুনিয়াকে প্রথম আইফোনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী স্টিভ জবস। ২০০৭ সালের ৯ জানুয়ারি সর্বপ্রথম ‘অ্যাপল আইফোন’ উন্মুক্ত করা হয়। ৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের আইফোনের দাম ছিল ৪৯৯ মার্কিন ডলার আর ৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজে আইফোনের দাম ছিল ৫৯৯ মার্কিন ডলার। ৩ দশমিক ৫ ইঞ্চি ডিসপ্লের প্রথম আইফোনে ছিল আইওএস ৩.১.৩ অপারেটিং সিস্টেম। এর প্রসেসর ছিল ৪১২ মেগাহার্টজের। অ্যাপল আইফোনে ছিল ২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা ও নন-রিমুভাল ব্যাটারি।

২. আইফোন ৩জি

২০০৮ সালে বাজারে আসে আইফোন ৩জি। এই ফোনটিতে কানেক্টিভিটির জন্য ছিল থ্রিজি নেটওয়ার্ক ও বিল্ট-ইন জিপিএস। সে সঙ্গে বাড়ানো হয়েছিল ইন্টারনাল স্টোরেজ। ৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের ফোনের দাম ছিল ১৯৯ মার্কিন ডলার আর ১৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের ফোনের দাম ছিল ২৯৯ মার্কিন ডলার। ৩ দশমিক ৫ ইঞ্চি এই ফোনের ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন ছিল ৩২০ x ৪৮০ পিক্সেলস। আইওএস অপারেটিংয়ে চালিত এই ফোনের প্রসেসর ছিল ৪১২ মেগাহার্টজ। র‍্যাম ছিল ১২৮ এমবি আর ক্যামেরা ছিল ২ মেগাপিক্সেলের।

৩. আইফোন ৩জিএস

এই আইফোনটিকেও বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন স্টিভ জবস। এটি ছিল আগের দুই মডেলের চেয়ে দ্রুতগতির। ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের এই ফোনের দাম ছিল ১৯৯ মার্কিন ডলার। ৩ দশমিক ৫ ইঞ্চি ডিসপ্লেতে ছিল ৩২০ x ৪৮০ পিক্সেল রেজ্যুলেশন। এটির অপারেটিং সিস্টেম ছিল আইওএস ৩। আইফোন ৩জিএসের প্রসেসর ছিল ৬০০ মেগাহার্টজের কর্টেক্স এ৮। র‍্যাম ছিল ২৫৬ মেগাবাইটের। এই ফোনেও ছিল নন-রিমুভাল ব্যাটারি।

৪. আইফোন ৪

২০১০ সালের জুনে ছাড়া হয় নতুন ডিজাইনের এই আইফোন। এতে ছিল আইওএস ৪ অপারেটিং সিস্টেম ও ফেসটাইম ভিডিও চ্যাট। ১৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের আইফোন ৪-এর দাম ছিল ১৯৯ মার্কিন ডলার আর ৩২ জিবি ভার্সনের দাম ছিল ২৯৯ মার্কিন ডলার। হাই রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লে সমৃদ্ধ এটাই ছিল পৃথিবীর প্রথম স্মার্টফোন। ১ গিগাহার্টজের কর্টেক্স এ৮ প্রসেসর ছিল আইফোন ৪-এ। ৫ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরায় ছিল এলইডি ফ্ল্যাশ ও ফ্রন্ট ক্যামেরা ছিল ভিজিএ, যা দিয়ে ভিডিওকল করা যেত।

৫. আইফোন ৪এস

২০১১ সালের অক্টোবরে বাজারে ছাড়া হয়েছিল আইফোন ৪ এস। এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই অ্যাপলের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে যান স্টিভ জবস। আইফোন ৪এসের সঙ্গে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দেন অ্যাপলের নতুন সিইও টিম কুক। এই ফোনে ছিল ডুয়েল কোর প্রসেসর। ১৬ জিবি, ৩২ জিবি ও ৬৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের দুটি আলাদা সংস্করণ ছিল এই ফোনের। ৬৪ জিবি স্টোরেজ ভার্সনের দাম ছিল ৩৯৯ মার্কিন ডলার। এই ফোনে ছিল ৩ দশমিক ৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে, যার রেজ্যুলেশন ছিল ৬৪০ x ৯৬০ পিক্সেলস। এর প্রসেসর ছিল ডুয়েল কোর ১.০ গিগাহার্টজের কর্টেক্স-এ৯। র‍্যাম ছিল ৫১২ মেগাবাইট। এলইডি ফ্ল্যাশসহ ৮ মেগাপিক্সেলর রিয়ার ক্যামেরা ও সামনে ছিল ভিজিএ ফ্রন্ট ক্যামেরা।

৬. আইফোন ৫

চার ইঞ্চি ডিসপ্লের প্রথম আইফোন ছিল আইফোন ৫। ২০১২ সালে এই আইফোন বাজারে আসে। আইফোন ৪এসের অপেক্ষাকৃত পাতলা সংস্করণ হিসেবে ফোনটি বাজারে ছাড়া হয়। ১৬, ৩২ ও ৬৪ জিবির তিনটি আলাদা স্টোরেজ সংস্করণ ছাড়া হয় এই আইফোনের। এতে ছিল আইওএস ৬ অপারেটিং সিস্টেম, সঙ্গে ছিল ১.৩ গিগাহার্টজের ডুয়েল-কোর প্রসেসর। ৮ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ১ দশমিক ২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা ছিল। আর ব্যাটারি ছিল ১৪৪০ এমএএইচের।

৭. আইফোন ৫এস এবং ৫সি

২০১৩ সালে বাজারে আসে দুটি আইফোন—আইফোন ৫এস ও ৫সি। এর মধ্যে আইফোন ৫সি ছিল প্রথম রঙিন আইফোন। আইফোন ৫এস মডেলে ছিল ৬৪-বিট এ৭ এসওসি, টাচ আইডি ও নিউ মোশন ডাটা প্রসেসর। ১৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের ৫সি মডেলের দাম রাখা হয় ১৯৯ মার্কিন ডলার। আর আইফোন ৫এস মডেলের দাম শুরু হয় ১৯৯ মার্কিন ডলার থেকে। দুটি ফোনেই ছিল ৪ ইঞ্চি ডিসপ্লে এবং আইওএস ৭ অপারেটিং সিস্টেম। ফটোগ্রাফির জন্য ছিল ৮ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ১.২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা।

৮. আইফোন ৬ এবং ৬ প্লাস

আবারও দুটি আইফোন একসঙ্গে মুক্তি দেয় অ্যাপল। এ দুটি মডেল হচ্ছে আইফোন ৬ ও আইফোন ৬ প্লাস। এর মধ্যে আইফোন ৬-এর ডিসপ্লে ছিল ৪ দশমিক ৭ ইঞ্চি। আইফোন ৬ প্লাসের স্ক্রিন ছিল ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি। দুটি ফোনেই ছিল এ৮ প্রসেসর, যা আগের সব আইফোনের প্রসেসরের তুলনায় ছিল দ্রুতগতির। এ দুই স্মার্টফোনে যোগ করা হয় অ্যাপল পে। আইফোন ৬-এর দাম শুরু হয় ১৯৯ মার্কিন ডলার থেকে আর আইফোন ৬ প্লাসের দাম শুরু হয় ২৯৯ মার্কিন ডলার থেকে। দুই ফোনেই ছিল ৮ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা ও ১ দশমিক ২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। এর অপারেটিং সিস্টেম ছিল আইওএস ৮।

৯. আইফোন ৬এস এবং ৬এস প্লাস

আইফোন ৬এস এবং ৬এস প্লাস মডেল দুটিতে যোগ করা হয় ফোর্স টাচ বা থ্রিডি টাচ প্রযুক্তি। দুই সেটেই রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের আইসাইট রিয়ার ক্যামেরা, যা দিয়ে ফোরকে ভিডিও ধারণ করা যায়। দুই আইফোনেই রয়েছে এ৯ চিপ এবং এই দুই আইফোনের অপারেটিং সিস্টেম আইওএস ৯। আইফোন ৬এসের দাম ধরা হয় ১৬ জিবি স্টোরেজ ৬৪৯ মার্কিন ডলার, ৩২ জিবি ৬৪৯ মার্কিন ডলার আর ৬৪ জিবি ৮৪৯ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ৬এস প্লাসের দাম ধরা হয় ১৬ জিবি স্টোরেজ ৭৪৯ মার্কিন ডলার, ৩২ জিবি ৮৪৯ মার্কিন ডলার এবং ৬৪ জিবি ৯৪৯ মার্কিন ডলার।

১০. আইফোন এসই

গত ২১ মার্চ অ্যাপল ইভেন্টে আইফোনের সর্বশেষ সংস্করণ ‘আইফোন এসই’ উন্মুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে আবার চার ইঞ্চির পর্দায় ফিরে আসে আইফোন। এর দাম রাখা হয়েছে ৩৯৯ থেকে ৬৪৯ মার্কিন ডলার পর্যন্ত। নতুন আইফোন এসইতে রয়েছে এ৯ চিপ। এতে রয়েছে অ্যাপল পে। সেই সঙ্গে জনপ্রিয় রোজ গোল্ড রঙে পাওয়া যাবে আইফোন এসই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here