হেফাজত আমীরকে কদম বুছি করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী?

23
328

“””যদিও আমি পক্ষে নই বিলকুল…..
….. কিন্তু আবেগি বটে”””
।…..
হেফাজত আমীরকে কদম মুছি করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী?
।শাপলা চত্বরে গুলি আর এখন কদম বুছি… বুঝলাম না…আপনারা বুঝে থাকলে কমেন্ট করতে পারেন…
প্রধানমন্ত্রী সহ অতিথিদের মঞ্চ ছিল আলেমদের সমান মাটিতেই। আলেমদের সম্মানে উচু করেন নি। যা স্বাভাবিক সরকার প্রধানের মঞ্চ হয়ে থাকে।সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ গনবভন থেকে ফিরে।
প্রধানমন্ত্রী প্রবেশ করেই এক এক করে মঞ্চের সকল শীর্ষ আলেমের কাছে গিয়ে একান্ত কুশল বিনিময় করে তারপরে নিজ আসনে বসেন।
আসনে বসার আগে সমস্ত আলেমদের কে সালাম প্রদান করেন।
আসনে বসেই প্রধানমন্ত্রীর চোঁখ পড়ে আল্লামা আনোয়ার শাহ কিশোরগঞ্জির প্রতি। তিনি সাধারন টেবিলে মঞ্চের বাহিরে আলেমদের সাথে বসা ছিলেন। ব্যাক্তিগত সচীবকে পাঠিয়ে ডেকে আনোয়ার শাহ সাহেবকে মঞ্চে আরেকটি আসন আনিয়ে সামনে বসান। এটা ছিল বঙ্গবন্ধু ও মাওলানা আতাহর আলী রহ তাদের দুই মহান পিতার সুসম্পর্কেরর সেই পুরানো স্মৃতির এক ঝলকেরর মতো।
আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদের দুঃসাহসিক লম্বা বক্তব্যের সময় প্রধানমন্ত্রী কোন প্রকার বিরক্ত বোধ না করে তিনি নোট গ্রহন করেন এবং মাথা নেড়ে সম্মতি দিতে থাকেন।
উলামায়ে কেরাম প্রমান করেছেন, দ্বীনের স্বার্থে কোন আপোশ নেই। হক কথা বলতে আর উম্মাহর কল্যানে সত্য তুলে ধরতে কোন সংকোচতা নেই। তেল মরদন নয়, বরং অধিকার আদায়ে তার সব সময় সব জায়গায় সোচ্ছার ও ঐক্যবদ্ধ কথা বলতে পারেন।
অনুষ্টানে গন ভবনে শীর্ষ আলেমদের পাশাপাশি তরুন কওমি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছিল এক অন্য রকম ভ্রাতৃত্ব বন্ধন। আমাদের টেবিলেই ছিলেন চট্টগ্রামের রুহী ভাই, পাশের টেবিলে মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজ্দু হাসনাত আমিনী, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি এনায়েত, তাসনিম আহমদ, মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন , কুতব জাফরি, আতাুল্লাহ আমিন, আনাস মাদানী, মাসউদুল কাদির, আবদুল্লাহ শাকির, কমাসিসার জুলফিকার মাহমুদী সহ তারুনদের প্রানবন্ত আড্ডা ছিল চোঁখে পড়ার মতো।
আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ দা.বা এর বক্তব্য ছিল উপস্থিত সকল আলেমদের হৃদয়ের কথা ও ব্যাথা। তাই তার বক্তৃতার সময় ছিল পুরো সম্মেলন জুড়ে আলেমদের “ঠিক ঠিক” আর মারহাব মারহাবা উচ্চারন। আলেমরা যেন চাচ্ছিলেন, তাদের হৃদয়ের কথা, প্রাণের দাবী, গনদাবী, কেউ আজ এই মওকায় রাষ্টের সর্বোচ্চ কর্থা ব্যক্তিদের সামনে তুলে ধরেন। মাসউদ সাহেব তার প্রতিফলন ঘটান।
আল্লামা মাসউদ হাফিজাল্লাহুর আগে আরো দুই শীর্ষ কওমি আলেম বক্তৃতা করেন। তারা স্বীকৃতি ও প্রসংশার বাহিরে কিছু বলেন নি। মাসউদ সাহেবের সাহসিকতার পর অন্যরা কেবল তাকে সমর্থন আর কথাগুলো চর্বিত করেছেন।
অনেক আলেমই বিএনপি জামাতের স্বীকৃতির ষড়যন্ত্রের সমালোচনা করেন তাদের বক্তৃতায়। মুফতি রুহুল আমিন সাহেব বলেন, আলেমদের দুপুরবেলা স্বীকৃতির নামে চীনমৈতি সসম্মেলন কক্ষে জড়ো করে এক গ্লাস পানিও পান করান নি ফ্যশন ম্যাডাম। তারা শুধু আমাদের ব্যাবহার করেছে। কওমির উন্নায়নে কোন কাজ করে নি। কখনো তাদের কাছ থেকে আমরা এমন আন্তিরকতা পাই নি।
অনুষ্টানে দেশের সকল শীর্ষ আলেম ছিলেন। এভাবে এক সাসিয়ানার নিচে দেশের সকল আলেমদের বসনো বাংলাদেশের জন্য বিরল ইতিহাস। এমনকি হেফাজতের আন্দোলনের সময়েও যারা এক টেবিলে বসে একমত হয়ে কাজ করতে পারেন নি নানা মতবিরোধের কারনে। তারা গতকাল এক টেবিলে ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় প্যভেলিয়ান থেকে নারেয়ে তাকবির ধ্বনী উঠেছিল। ছিল আলেমদের চোঁখে মূখে উচ্চাস। ৭৫এর স্বপরিবার হত্যাকাণ্ডের কথা বললে প্রধানমন্ত্রীর কান্না জড়িত কষ্টে অনেক আলেমের চোঁখে ছিল পানির ঝাপসা।
ভাষন শেষে প্রধানমন্ত্রী এসেই শায়খুল ইসলামা আল্লামা আহমদ শফি দা.বা এর কদমবুচি করেন। হুজুর চমকে উঠে মাথায় হাত দেন, পরে হাত দিয়ে ধরে বাধা দেন। (ভিডিও ফুটেজটি হয়তো টিভিতে পাওয়া যাবে)। সাংবাদিকরাও আকস্মিক বিষয়টি বুঝতে পারেন নি, তারা দৌড়ে এসে ছবি তুলেন।তখন হুজুর উচ্চাসিত ভাবে কুশল বিনিময় ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ চারিতা করেন। যা ছিল অন্য রকম এক দৃশ্য। একজন অতিশয়পর বৃদ্ধা পিতা ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় অভিবাবক যেন, তার স্নেহের কন্যাকে আপন করে নিয়েছেন পরম সোহাগমাখা মমতায়। যিনি শাসন করেন আবার সোহাগও করেন।
তবে অনুষ্টানে সবচেয়ে বিবর্তকর পরিস্থিতি ছিল, আমাদের নবীন প্রবীন চেয়ার পাগল কিছু রাজনৈতিক নেতাদের বার বার সামনের নির্ধারিত আসনগুলোতে বসার চেষ্টা করে ভীর করা। আর অনুষ্টান শুরুর আগে পেছনে তাদের আসন গ্রহনের জন্য মাইকে আম্বরশাহ মসজিদের খতিব মাজহারুল ইসলাম ভাই অন্তত ২০বার অনুরোধ করেন। হায়, চেয়ার!
নৈশ্যভোজে অনেক আলেমই বলেছেন, আলেমদের সাথে সরকারের এই সম্পর্ক অটুট থাকলে, বামরা সরকারকে প্রভাবিত করতে পারতো না। অপর দিকে প্রধানমন্ত্রী যে সম্মান দেখিয়েছেন, তা বিএনপি জামাতের সময় আলেমরা কখনো পান না। খালেদা জিয়া কখনো কোন আলেমকে দেখে চেয়ার থেকে উঠা বা ব্যক্তিগত কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে আলাদা মূল্যায়ন করতেন না। তার মাঝে একটি অহমিকা কাজ করতো।
আল্লামা আহমদ শফি হাফিঃ এর দোয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নিজে মাইক ঠিক করে দেন। আবার খাবারের সময় নিজে হুজুরের প্লেটে খাবার তুলে দিয়ে এক অসামান্য সম্মান জানান বাংলাদদেশে প্রধানমন্ত্রী।
নৈশ্যভোজে ছিল রাজকীয় বাহারি আয়োজন। আমাদের খাবার টেবিলে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচীব, একান্ত সচীব, ব্যক্তিগত সহকারি মন্ত্রীদেরকে পাঠান। তারা আমাদের প্লেটে খাবা তুলে দেন, পানি ঢেলে দেন। বার বার আরেকটু খাবার নিতে অনুরোধ করেন। এসব ছিল আলেমদের সম্মানে রাষ্টের এক অন্যরকম ভাল লাগার সুন্দর উজ্জলতম দৃশ্য।

23 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here