নতুন কারে উঠুন আর ব্যাস একটা বাটন প্রেস করুন, আপনার গাড়ি চলতে আরম্ভ করবে—এখানে সবচাইতে মজার ব্যাপার হলো, আপনার পাশে কোন ড্রাইভারের প্রয়োজনীয়তা নেই, গাড়ি ব্যাস নিজে নিজেই চলবে আর নিরাপদে পৌঁছে দেবে আপনার গন্তব্যে। শুনতে অনেকটা সায়েন্স ফিকশন আর ফিউচার টেক মনে হলেও গুগল সেলফ ড্রাইভিং কার প্রোজেক্টের মাধ্যমে এটি এখন জীবন্ত প্রযুক্তি। তবে বর্তমানে শুধু গুগল নয় বরং আরো ১৯টি কোম্পানি; যথা- টেসলা, উবার, ওয়েমো (গুগল), টয়োটা, বিএমডাব্লিউ, ভলভো, নিসান, ফোর্ড, জেনারেল মোটরস, ডাইমলার, আউডি, বাইদু (চাইনিজ সার্চ ইঞ্জিন), হোন্ডা, হুন্ডাই, অটো সাপ্লায়ার বশ, পিএসএ গ্রুপ, স্টার্ট আপ ফ্যারাডে ফিউচার, লিইকো, অ্যাপেল—ড্রাইভার ছাড়া গাড়ীর উপর কাজ করছে এবং আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া গেলে ২০২১ সালের মধ্যে রাস্তায় এই বিনা ড্রাইভারের কার চলতে দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে একটি গাড়ি কীভাবে বিনা ড্রাইভারে নিজে নিজে চলতে পারে? ড্রাইভার লেস কারের পেছনের প্রযুক্তি গুলো কি কি এবং এটি আমাদের জন্য কতটা নিরাপদ? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক…
সেলফ ড্রাইভিং কার
গোটা পৃথিবীতে বছরে গড়ে ১,২৫০,০০০ মানুষ তারমদ্ধে বাংলাদেশে ২০,০০০ মানুষ, ইন্ডিয়াতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ এবং অ্যামেরিকাতে গড়ে ৩০ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়। যখন গাড়ি চালানোর কথা আসে, আমরা মানুষেরা সত্যিই গাড়ি চালানতে খারাপ। তার উপর আবার ড্রিঙ্ক করে গাড়ি চালানো, গাড়ি চালাতে চালাতে ফোনে কথা বলা ইত্যাদি অভ্যাসের জন্য বিরাট সব দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাই। তবে মেশিন আমাদের মানুষদের তুলনায় অনেক ভালো ড্রাইভার হিসেবে প্রমানিত হতে পারে—একে তো এরা মদ্য পান করে না বা মোবাইলে কথা বলে না এবং দ্বিতীয়ত এরা মানুষের চেয়ে অনেক দ্রুত ভাবতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর মেশিন মানুষের তুলনায় কতটা ভালো এবং নিরাপদে গাড়ি চালাতে সক্ষম সেই ব্যাপারে আমি এই আর্টিকেলের শেষে আলোচনা করবো। এখন ড্রাইভার লেস কারের পরিচালনা করার প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কীভাবে কাজ করে?
এই আর্টিকেলে মূলত গুগল সেলফ ড্রাইভিং কার প্রোজেক্ট ওয়েমো কীভাবে কাজ করে তা আলোচনা করবো। দেখুন শুধু জিপিএস ডাটা কোন গাড়িকে নির্ভুলভাবে রাস্তায় চালানোর জন্য যথেষ্ট হতে পারে না, কেনোনা জিপিএস এতোটা নির্ভুল ন্যাভিগেশন প্রদান করতে সক্ষম নয়। ড্রাইভার ছাড়া গাড়ি চলার জন্য প্রয়োজন আরো কিছু সেন্সর যেগুলো স্পেশাল সফটওয়্যার এবং জিপিএস এর সাথে একত্রে কাজ করে নিরাপদ ভ্রমনের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। সেলফ ড্রাইভিং কার প্রযুক্তির সবচাইতে ভালো দিক হচ্ছে এতে ব্যবহৃত হওয়া প্রযুক্তি অলরেডি কোন না কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে, এগুলো কোন নতুন বা অপরীক্ষিত প্রযুক্তি নয় যা ঝুঁকির সম্ভবনা ঘটাতে পারে।
প্রথমত কারের উপরে একটি লিডার (LiDAR) সেন্সর লাগানো থাকে; যেটি সম্পূর্ণ একটি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তির উপর কাজ করে। সহজভাবে বলতে গেলে এটি একটি ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরার মতো যাতে ৩২ অথবা ৬৪ লেজার বিন্যাস রয়েছে। লিডার গাড়ীর সামনে আসা বা চারপাশে থাকা সকল অবজেক্টের উপর লেজার বীম ছুড়ে মারে এবং অবজেক্টের সাথে বাঁধা খেয়ে বীম আবার গাড়ীর সেন্সরে ফিরে আসলে এটি অবজেক্টটির এবং গাড়িটির মধ্যে আসল দূরত্ব নির্ণয় এবং একটি ৩ডি ম্যাপ তৈরি করতে সক্ষম হয়। এভাবে গাড়ি সামনের কোন গাড়ি বা যেকোনো অবজেক্ট সম্পর্কে ধারণা গ্রহন করে। তাছাড়া সেলফ ড্রাইভিং কার সড়কের একদম সোজা লাইন মেনে চলতে থাকে, যেখানে আমরা মানুষেরা এবড়ো থেবড়ো ড্রাইভিং করি।
[youtube https://www.youtube.com/watch?v=fbWeKhAPMig?feature=oembed]
লিডার ছাড়াও ড্রাইভার লেস গাড়ীতে দ্বিতীয় চক্ষু হিসেবে রয়েছে প্রশস্ত স্ক্রীন হাই স্ট্যান্ডার্ড ক্যামেরা। এই ক্যামেরাটিও সর্বদা গাড়ীর চারপাশের পরিবেশের উপর নজরদারী রাখে এবং বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে। এই ক্যামেরা বিশেষ করে কোন পথচারী, সাইকেল-আরোহী, এবং অন্যান্য গাড়ি চালকের উপর বিশেষ নজর রাখে। তাছাড়া এই ক্যামেরা দিয়েই সেলফ ড্রাইভিং কার বিভিন্ন রোড সাইন দেখতে পায় এবং ট্র্যাফিক সিগন্যালের দিকে খেয়াল রাখে।
তাছাড়া গাড়ীতে চারটি র্যাডার ইউনিট লাগানো থাকে যাতে সামনের দিকে ২টি সেন্সর এবং পেছনের দিকে দুইটি সেন্সর থাকে। এই সেন্সর গুলো গাড়ীর গতিবেগ এবং গাড়ীর চারপাশে অবস্থিত গাড়ীর গতিবেগের উপর নজর রাখে। তাছাড়া আপনার গাড়িটি কখন দ্রুত চলবে আর কখন ধিরে চলবে বা কখন ব্রেক করতে হবে এই বিষয় গুলোর সিগন্যাল রাডার থেকে প্রসেসিং ইউনিটে (গাড়ীর ব্রেইন) পাঠানো হয়। তাছাড়া জাইরোস্কপ সহ আরো কিছু উন্নত সেন্সর থেকে প্রসেসিং ইউনিটে সিগন্যাল পাঠানো হয়, যাতে গাড়িটি দুর্ঘটনা এড়াতে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সেলফ ড্রাইভিং কারের বাহিরের দিকে একটি এন্টেনাতে জিপিএস রিসিভার লাগানো থাকে, যেটা স্যাটেলাইট থেকে জিপিএস ডাটা সংরক্ষিত করে। তবে শুধু জিপিএস ম্যাপের উপর নির্ভর থেকে নয়, গাড়িটির একটি নিজস্ব ডিজাইন করা ম্যাপ থাকে যেখানে প্রত্যেকটি জায়গা এবং প্রত্যেকটি রোডের অত্যন্ত খুঁটিনাটি বর্ণিত থাকে। তাছাড়া সামনে চাকাতে লাগানো থাকা একটি আলট্রা সনিক সেন্সর গাড়ীর নড়াচড়ার উপর নজর রাখে।
বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন সফটওয়্যার
এতক্ষণ আলোচনা করলাম গাড়ীর বিভিন্ন হার্ডওয়্যার এবং এতে লাগানো থাকা হরেক রকমের সেন্সর নিয়ে। গাড়ীর বিভিন্ন সেন্সর থেকে আসা ডাটা গুলোকে একটি স্পেশাল বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন সফটওয়্যার রিয়াল টাইমে প্রসেস করে এবং কি করতে হবে তার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। কিছু ডাটার উপর প্রসেস করে গাড়িকে নিজের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয় আবার কিছু ডাটার রেজাল্ট একদম হার্ড ভাবে প্রোগ্রাম করা থাকে, যেমন- ট্র্যাফিক লাইট লাল হয়ে গেলে গাড়িটি একে বারে থেমে পড়বে, এতে চিন্তা করার আর কিছু নেই। তাছাড়া সেলফ ড্রাইভিং কার আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আগের ড্রাইভিং এক্সপেরিএন্স কাজে লাগিয়ে বর্তমান ড্রাইভিং এ উন্নত সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে।
শুধু নির্ভুল আর নিরাপদ ভাবে গাড়ি চালানো নয়, ড্রাইভার ছাড়া এই গাড়ি নিজের উন্নত মেশিন লার্নিং অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে ঠিক মানুষের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে সক্ষম। যেমন ধরুন আপনার গাড়ীর পাশ দিয়ে এবং সামনে ধীর গতিতে অন্য গাড়ি চলছে এবং রাস্তা যথেষ্ট ফাঁকা রয়েছে, তবে এই অবস্থায় আপনার গাড়িটি আর গতি বাড়িয়ে সামনের ধীরে চলা গাড়ি গুলোকে ওভারটেক করবে। তাছাড়া গাড়িটি সর্বদা রাস্তার বামদিকেই চলার জন্য বেশি প্রয়োজনীয়তা খুঁজে নেবে। তাছাড়া ধরুন রাস্তার সামনে দিয়ে কেউ পারাপার হচ্ছে কিংবা কোন সাইকেল আরোহী পার হচ্ছে, এই অবস্থায় গাড়িটি সুবিধা দেওয়ার জন্য স্লো হয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে ব্রেক করবে।
সেলফ ড্রাইভিং কার কতটা নিরাপদ?
এটি সবচাইতে একটি বড় প্রশ্ন; গাড়িকে কোন রোবট দ্বারা চালাতে দেওয়া কতোটা নিরাপদের কাজ? আগেই উল্লেখ্য করেছি, গোটা পৃথিবীতে বছরে গড়ে ১,২৫০,০০০ মানুষ তারমদ্ধে বাংলাদেশে ২০,০০০ মানুষ, ইন্ডিয়াতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ এবং অ্যামেরিকাতে গড়ে ৩০ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় এবং এই সমস্থ দুর্ঘটনা ঘটে মানুষ চালিত যানবাহনে।
গুগল দাবি করে যে, প্রায় ৯৪% দুর্ঘটনা ঘটে শুধু মানুষের নিজের সিদ্ধান্ত এবং ভুলের কারণে। এর মধ্যে জোরে গাড়ি চালানো, মদ্য পান করে গাড়ি চালানো, ফোনে কথা বলা এবং রাতের অন্ধকারের জন্য বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। গুগল সেলফ ড্রাইভিং কার ইতিমধ্যে ২ মিলিয়নের বেশি মাইল রাস্তা অতিক্রান্ত করেছে কোন অ্যাকসিডেন্ট না ঘটিয়ে। যে অ্যাকসিডেন্ট ঘটেছে এতে গুগল কারের কোন দোষ নেই বরং মানুষ চালিত কারের জন্যই অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। আর সত্যি কথা বলতে গুগল ওয়েমো কার এখনো পর্যন্ত অ্যাকসিডেন্ট ফ্রী, আর এটাই সেলফ ড্রাইভিং কার পছন্দ করার মূল কারণ হতে পারে।
শেষ কথা
এটাতো কেবল নতুন কিছু শুরুর দিক, তবে রাস্তার সকল গাড়ি গুলোকে যদি স্বয়ংক্রিয় আর চালক বিহীন গাড়ীতে রূপান্তরিত করা যায়, তবে অ্যাকসিডেন্ট এর মাত্রা জিরোতে নিয়ে আনা সম্ভব। সাথে শুধু কার নয় বরং ট্রাক গুলোকেও সেলফ ডাইভ করা হবে, এতে মানুষ কখনোই বড় ধরনের দুর্ঘটনার কবলে পড়বে না। আর গাড়ীতে উঠে ঘুমিয়ে, রেস্ট করে, নিশ্চিন্ত ভাবে আপনি পৌঁছাতে পারেন আপনার গন্তব্য স্থানে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি অসাধারণ ছিল। সেলফ ড্রাইভিং কার নিয়ে আপনার মতামত কি? আমাদের জানাতে নিচে টিউমেন্ট করতে ভুলবেন না কিন্তু আর অবশ্যই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
buy cheap generic lipitor atorvastatin cost order lipitor 20mg generic
buy atorvastatin 10mg generic atorvastatin 40mg buy lipitor 40mg pills
buy generic ciprofloxacin for sale – buy keflex medication buy augmentin pills
glucophage generic – buy bactrim 480mg sale buy lincomycin 500mg generic
buy zidovudine online – buy lamivudine 100 mg online cheap allopurinol drug
clozapine 100mg drug – altace without prescription pepcid 40mg drug
purchase retrovir online pill – allopurinol 100mg ca
clozapine 100mg over the counter – coversum cheap purchase famotidine