ডুবন্ত জাহাজে রহস্যময় ভাণ্ডার

10
332

২৭৭ বছর আগে ১৭৪০ সালে জাকার্তার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়েছিল ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একটি বাণিজ্যিক জাহাজ। জাহাজটিতে আড়াশই নাবিক ছিল। দুর্ভাগ্যবশত কোন দিন আর জাহাজটির নোঙর করা হয়নি জাকার্তার বুকে।

সাগরের তলদেশে হারিয়ে যায় রোজউইজক নামের জাহাজটি। বহু বছর অনুসন্ধানের পর জানা যায়, দুর্ঘটনার মুখে জাহাজটি ইংল্যান্ডের কেন্ট উপকূলে ডুবে গিয়ে গিয়েছিল। তবে ঠিক কী কারণে জাহাজটি ডুবেছিল সেই রহস্যের কূলকিনারা হয়নি আজো। জাহাজে থাকা আড়াইশ নাবিকের কেউ প্রাণে বাঁচেনি।

শত বছর পর ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেই বিখ্যাত জাহাজটি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন গবেষকরা। ডুবন্ত জাহাজের মধ্যে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন, জাহাজের কেউ প্রাণে না বাঁচলেও স্মৃতিবহুল অনেক কিছু এখনো রয়ে গেছে জাহাজে। আর এই অনেক কিছুর বেশিরভাগই রহস্যময় মূল্যবাণ রত্নভাণ্ডারের সামিল।

ডাচ সরকারের পক্ষে এই গবেষণার কাজটি করছে ব্রিটিশ সরকারের সরকারের সাংস্কৃতিক শাখা হিসটোরিক ইংল্যান্ড। গবেষকদের মতে, জাকার্তা থেকে মশলা এবং চীনামাটির বাসন আসন জন্য রূপার পয়সা নিয়ে রওনা দিয়েছিল জাহাজটি।

সামুদি্রক প্রত্নতাত্তিকদের একজন অ্যালিসন জেমস বলেন, এটিতে পাওয়া ধনসম্পদের নমুনা দেখে ধারণা করা যায় সাগরে ডুবে যাওয়ার পর এত দীর্ঘ সময়ে অনেক কিছু পানিতে ভেসে গেছে, অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এখনো সেই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে মূল্যবাণ অনেক কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে।

জাহাজের খোলে আটকে থাকা সিন্দুকের মধ্যে তরবারি, নানা ধরনের ধাতু, ব্যক্তিগত ব্যবহার্য ক্ষুদ্রাকার বস্তু এমনকি রৌপ্যের অনেক জিনিসপত্র রয়েছে। রৌপ্যের জিনিসপত্রের মধ্যে মুদ্রা থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুরই সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। এই সব জিনিসের নমুনা কেউ কেউ সন্দেহ করছেন, তখন নাবিকদের একটা অংশ রূপাসহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল চোরকারবারির সাথেও যুক্ত থাকতে পারে।

২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো জাহাজের মধ্যে অনুসন্ধান চালানোর পর সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া রৌপ্য মুদ্রাসহ অনেক কিছুই ডাচ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে, রূপার চামচ, ধাতুর জগ, গ্লাস সেট, চাকু এবং জুতা রয়েছে। নতুন করে আরো অনুসন্ধান করতে চায় গবেষকরা। নাবিকদের ব্যবহার্য জিনিসের নমুনা থেকে তাদের জীবনধারার একটি চিত্রও তুলে ধরতে চান গবেষকরা।

নিহত ২৫০ জন নাবিকের ১১ জনের ব্যাপারে গবেষকরা জানতে পারলেও এখনো তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়ার ২৫০টি জাহাজের মাত্র তিনটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে। তাই ঐতিহাসিক কারণে রোজউইজক নিয়ে গবেষণা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ।-ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

10 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here