সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২

9
339
” বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম “

আসসালামু-আলাইকুম,

আমি আজ আপনাদের কাছে নিয়ে এসেছি সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২।

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২

🙂 🙂 🙂 কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মৌলিক শ্রেণী বিভাগ(BASIC TYPES OF COMPUTER NETWORK):) 🙂 🙂

কম্পিউটার নেটওয়ার্কের শ্রেণীবিভাগ আলোচনার আগে আমাদের জানতে হবে নেটওয়ার্কে কম্পিউটার কতটুকু ভুমিকা পালন করে । তাই আমি আপনাদের সাথে আগে নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের ভূমিকা আলচনা করবো । নিন্ম রুপঃ-

  • ক্লায়েন্ট (client): নেটওয়ার্ক এ ক্লায়েন্ট এর একটি অন্য নাম আছে তাহল ওয়ার্ক ষ্টেশন । ক্লায়েন্ট পিসি নেটওয়ার্কে অবস্থিত সার্ভার বা অন্য কোন পিসি থেকে ক্যাবল সার্ভিস নিয়ে থাকে ।এটি নেটওয়ার্কের অন্য সদস্যদের সার্ভিস অফার করে না ।এটি এমন একটি কম্পিউটার সিস্টেম যা নেটওয়ার্কের শেয়ার করা রিসোর্স সমূহ ব্যবহার করে থাকে ।
  • সার্ভার (server):নেটওয়ার্কে সার্ভারের কাজ হচ্ছে ক্লায়ন্টের পিসি থেকে যে কোন অনুরোধে তড়িৎ গতিতে সারা দেয়া ।কিছু সার্ভার আছে যেঁগুলোকে বলা হয় ডেডিকেটেভ সার্ভার এগুলো শুধুমাত্র সার্ভারের কাজেই করে । মনে রাখতে হবে কোন ডেডিকেটেভ সার্ভার নেটওয়ার্ক ক্যাবল মাত্র একটি বিশেষ সার্ভিস বা সেবা প্রদান করে থাকে ।যদি কোন সার্ভার মেইল সার্ভিস প্রদান করে তাকে মেইল সার্ভার বলে ।যে সার্ভার ওয়েব সার্ভিস সেবা প্রদান করে তাকে ওয়েব সার্ভার বলে ।সার্ভার কখন নিজেকে ক্লায়ন্ট হিসেবে প্রকাস করে না ।কোন নেটওয়ার্কে ব্যবহারির সংখ্যা ১০ অধিক হলে ডেডিকেটেভ সার্ভার ব্যবহার করা উচিৎ ।
  • পিয়ার(peer): এটি নেটওয়ার্কে  ক্ষেত্রে  পিসি  ও সার্ভার ব্যবহারকারি উভয়েরই কাজে লাগে । অর্থাৎ এটি সার্ভার সার্ভিসের জন্য অনুরোধ পাঠিয়ে থাকে এবং তখন যদি অন্য কোন পিসি সাহায্য চেয়ে থাকে তাহলে তাকেও সাহায্য করে ।
  • হোষ্ট(host): কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর বহুল পরিচিত নাম এটি এবিষয়ে আমার মনে হয় না কারো সন্দেহ আছে ।নেটওয়ার্কে ব্যবহারিত এই আই পি এড্রেস সম্বলিত যে কোন কম্পিউটার বা ডিভাইস কে হোষ্ট(host) বলে ।

> > > কাঠামো এবং সার্ভিসের উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্কের শ্রেণীবিভাগ <<<

নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রন এবং সার্ভিস প্রদানের উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্কে  প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।এগুলো হচ্ছেঃ

১)ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক

২)পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক

৩)মিশ্র বা হাইব্রিড নেটওয়ার্ক

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২

*******ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক  (client server network)***********

  • ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক  (client server network): ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক  এর মধ্যমনি হচ্ছে এক বা একাধিক ডেডিকেটেড সার্ভার ।ডেডিকেটেড সার্ভার ক্লায়েন্ট পিসির জন্য প্রয়োজনীয় সার্ভিস প্রদান করে ।সার্ভিস সমূহের মধ্যে প্রধান গুলো হচ্ছেঃ ফাইল, প্রিন্ট মেসেজ , ডেটাবেজ, এপ্লিকেশন ইত্যাদি।

যে কেন্দ্রিয় কম্পিউটারের ইউজাররা প্রয়োজনীয় তথ্য বলি সংরক্ষন করে এবং রক্ষিত রিসোর্স ব্যবহার করে তাকে  সার্ভার বলা যেতে পারে এবং যে সকল কম্পিউটার এ সংরক্ষিত তথ্যবলি প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় তাকে ক্লায়ন্ট বলা যেতে পারে । সার্ভার কম্পিউটার ক্লায়ন্ট  কম্পিউটারের তুলনায় শক্তিশালী হয়ে থাকে এবং একে পরিচালনা করার জন্য তখন সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় ।এই সফটওয়্যারকে বলা হয় নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম বা নস ।নস এর উদাহরণ দিতে গেলে পাওয়া যায় উইন্ডোজ এনটি এবং উইন্ডোজ সার্ভার .

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২

*********পিয়ার টু পিয়ার (peer to peer)********

  • পিয়ার টু পিয়ার (peer to peer): নেটওয়ার্কের আওতার প্রতিটি পিসির রিসোর্স শেয়ারিং এর জন্য এটি সমান ভুমিকা পালন করে । এখানে কোন ডেডিকেটেড সার্ভার থাকে না ,ফলে পিসি গুলোর মধ্যে গুরুতের দিক দিয়ে শ্রেণীবিন্যাস ও নেই ।প্রতিটি পৃথক পিসি ডেটার নিরাপত্তা বিধানে নিজেরা দায়ি থাকে । এক্ষেত্রে পিসি ব্যবহারকারি নির্ধারণ করে থাকেন যে তার কোন ফাইল  সমূহ অন্যান্যদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ।

 সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২

********* মিশ্র বা হাইব্রিড নেটওয়ার্ক (hybrid network)********

  • মিশ্র বা হাইব্রিড নেটওয়ার্ক (hybrid network): মিশ্র বা হাইব্রিড নেটওয়ার্ক ক্লায়েন্ট সার্ভার এবং পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্কের যৌথ রূপ ।সাধারণত হাইব্রিড নেটওয়ার্কে প্রধানত ক্লায়েন্ট সার্ভার ব্যবহার করা হয়ে  থাকে। এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়ে  থাকে।

    >>> আকার আকৃতি এবং বিস্তৃতির উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্কের শ্রেণী বিভাগ<<<

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২

******** লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যান(lan-local area network)*******

  • লোকালএরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যান(lan-local area network): একটি নির্দিষ্ট সীমানার কম্পিউটার যদি একটি নেটওয়ার্ক ভুক্ত হয় তখন তাকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যান বলে ।ল্যান এর আওতাধীন কম্পিউটার গুলো অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের মাঝে থাকতে হবে ।

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২********** মেট্রো পলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক(man-metropoliton area network)**********

  • মেট্রো পলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক(man-metropoliton area network): যে নেটওয়ার্ক একটি পুরো শহর বা বড় কোন এলাকা ব্যাপি বিস্তার থাকে তাকে ম্যান বা মেট্রো পলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে।

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২                                                                                                    *********ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (WAN-wide area network)**********

  • ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (WAN-wide area network): অনেকগুলো ল্যানের সমন্বয়ে তৈরি বৃহত্তম নেটওয়ার্ক হচ্ছে ওয়ান বা ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক ।এটি ল্যান সমূহ বিভিন্ন ভৌগলিক দূরত্বে অবস্থিত হয়ে থাকে ।এটির আওতাধীন কম্পিউটার গুলো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারে ।তবে এটির সম্পূর্ণ বিষয়টি নির্ভর করে ফিজিক্যাল ট্রান্সমিশন লাইন,ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল ,স্যাটালাইট ট্রান্সমিশন এবং ম্যাইক্রোওয়েব ট্রান্সমিশন ইত্যাদির উপর ।সম্প্রতি সময়ে ইন্টারনেট সারা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ওয়ান হিসেবে স্বীকৃত । ওয়ানের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এটির স্বল্প পরিমাণ ব্যান্ড উইডথ তাদের ইউজারের চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত নয় ।এর জন্য ল্যানের তুলনায় ওয়ানে  গতি অনেক কম । এর ফলে অডিও এবং ভিডিও ফাইলের মত বড় ফাইল সমূহ ট্রান্সফার করেতে বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে ।

🙂 🙂 🙂 নেটওয়ার্ক সার্ভার(NETWORK SERVER) 🙂 🙂 🙂

যেকোন নেটওয়ার্কের জন্য সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ অংশ হচ্ছে তার সার্ভার ।সার্ভারকে নেটওয়ার্কের প্রান বলে অভিহিত করা হয় । সার্ভার যদি সঠিক ভাবে সার্ভিস প্রদান না করে থাকে তাহলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে পরতে বাধ্য হয় ।নেটওয়ার্ক ভুক্ত সকল পিসিকে সর্বদা সার্ভার সার্ভিস দিয়ে থাকে ।

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২ *********  ফাইল সার্ভার(file server)*********  

  • ফাইল সার্ভার(file server) :ফাইল সার্ভারের কাজ হচ্ছে ব্যবহারকারীকে ফাইল শেয়ারের সুযোগ করে দেয়া । এছাড়াও এটি ফাইল সরক্ষন, উত্তোলন এবং এক পিসি থাকে অন্য পিসিতে ফাইল স্থানন্তরের সুবিধা প্রদান করে ।ফাইল সার্ভার দ্বারা ক্লায়েন্ট পিসির জন্য কোন প্রকার ডেটা প্রসেসিং এর কাজ করা যায় না  ।

সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২  ******প্রিন্টার সার্ভার (print server)*******  

  • প্রিন্টা সার্ভার (print server): প্রিন্ট সার্ভার কাজ হচ্ছে এক বা একাধিক প্রিন্টারের গ্রুপকে নিয়ন্ত্রন করা ।তারা বিশেষ করে ক্লায়েন্ট পিসি থেকে আগত প্রিন্টিং অর্ডার জমা করে রাখে ।এবিষয়টিকে বলা হয় কিউইয়িং । প্রিন্ট সার্ভার স্পুলারের সাহায্যে প্রিন্ট অর্ডার কে ধরে রাখে যতক্ষণ পর্যন্ত প্রিন্টার প্রিন্ট করার জন্য তৈরি না হয় ।প্রিন্ট একবার প্রস্তুত হলেই সার্ভার তাতে  প্রিন্টিং কাজ শুরু করে দেয়।
সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২
******এপ্লিকেশন সার্ভার ( application server)****
  • এপ্লিকেশন সার্ভার ( application server):এটি নেটওয়ার্কিং এর অন্তত্য দামি এবং ক্ষমতা শীল সফটওয়্যার পিসি ক্লায়েন্টকে ব্যবহারের সুযোগ করে দেয় । এটি তার শক্তিশালী মেশিনের  সাহায্যে ক্লায়েন্ট পিসির চাহিদা অনুযায়ী ডেটা প্রেসেস করে এবং তার ফালাফল ক্লায়েন পিসি কে ফেরত দেয় ।এছাড়া  এপ্লিকেশন সার্ভার ব্যবহারের মাধ্যমে যে কোন কোম্পানি তার সফটওয়্যার লাইসেসিং খরচ কমাতে পারে ।
সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২*****মেসেজ সার্ভার (message server)*****
  • মেসেজ সার্ভার (message server): ফাইল সার্ভিসের মাধ্যমে শুধুমাত্র ফাইল ডেটা আকারে এক কম্পিউটার থেকে  অন্য কম্পিউটারে   চলাচল করে । কিন্তু মেসেজ সার্ভারের মাধ্যমে ডেটা গ্রাফিক্স ,অডিও, ভিডিও এবং টেক্সট বাইনারি আকারে চলাচল করে থাকে । বর্তমানে মেসেজ সার্ভিস ডেটা ট্রান্সফারের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।মেসেজ সার্ভিসকে ইউজার, ডকুমেন্ট এবং এপ্লিকেশন সমূহের মধ্যে জটিল প্রকৃতির ইন্টার এ ্যাকসনের সমন্বয় সাধন করতে হয় । মেসেজ সার্ভিসকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয় ।যথা  ঃ
🙂 ইলেক্ট্রনিক মেল  (E-mail)
:)ওয়ার্ক গ্রুপ এপ্লিকেশন ( Workgroup application)
🙂 অবজেক্ট ওরিয়েন্টড এপ্লিকেশন ( object oriented application)
🙂 ডিরেক্টরি সার্ভিসেস(directory services)
সহজ বাংলায় নেটওয়ার্কিং (NETWORKING) ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল :পর্ব-২
  • ডেটাবেজ সার্ভার( datebase server): ডেটাবেজ সার্ভার নেটওয়ার্কে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রকৃতির পিসি বা ওয়ার্ক ষ্টেশনকে শক্তিশালী ডেটা বেজ ব্যবহারের সুযোগ করে দেয় । অধিকাংশ ডেটাবেজ সিস্টেমই ক্লায়েন্ট সার্ভার ভিত্তিক । এটির দুটি অংশ থাকে একটি ক্লায়েন্ট পিসিতে অন্যটি সার্ভারে । এটি মূলত দুর্বল ফাংশন গুলো ব্যবহার করে ক্লায়েন্ট পিসিতে এবং শক্তিশালী ফাংশন এর কাজ করে সার্ভারে । এর বাইরে কিছু গুরুত্ব পূর্ণ কিছু সার্ভিসের জন্য এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।সেগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে ডেটা সিকিউরিটি প্রদান , ডেটা অপটিমাইজেশন , ডেটা ডিট্রিবিউসন ইত্যদি ।

আরেকটি কথা আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে একটি  ক্ষমতাধর সার্ভার দ্বারাই আপনি ফাইল ,প্রিন্ট ,এপ্লিকেসন ,মেসেজ এবং ডেটা বেজ সার্ভার  হিসেবে একসাথে কাজ করতে পারে । তবে নেটওয়ার্কের সর্বউত্তম দক্ষতা কাজে লাগাতে হলে প্রত্যেকটির জন্য আলাদা সার্ভার ব্যবহার করা উচিত ।

9 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here