বিশাল দেশ ভারত, তার বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই। আর এই মুম্বাইকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অপরাধীদের বিশাল এক জগত। দল-উপদলে বিভক্ত এই অপরাধজগতকে নিয়ন্ত্রণ করেছে মাফিয়ারা, এখনও করছে। তাদের ইশারায় ড্রাগ থেকে শুরু করে অবৈধ হীরের চোরাচালান হচ্ছে, পাচার হচ্ছে হাজার রকমের মালামাল, এমনকি মানুষও। মুম্বাই পুলিশ এদের ধরতে মরিয়া, কিন্ত এই মাফিয়ারাও গিয়ে বসে থাকে ভারতের বাইরে, আস্তানা গাঁড়ে দুবাই বা সিঙ্গাপুরে। সেখান থেকেই তারা নিয়ন্ত্রণ করে এই অপরাধজগত।
মাফিয়া বললেই চোখে ভাসে দাউদ ইব্রাহিমের ছবি, কিংবা মনে পড়ে টাইগার মেমন, ছোটা রাজনের নাম। তবে সংখ্যায় খুব কম হলেও, ভারতের এই বিস্তৃত অপরাধ জগতের অংশ হয়েছিলেন কয়েকজন নারীও। ‘এগিয়ে চলো’র ধারাবাহিক আয়োজন গ্যাংস্টার পরিক্রমায় আজ থাকছে দু’জন নারী মাফিয়ার কথা…
নীতা নায়েক
বলিউডি সিনেমায় নারী গ্যাংস্টারদের সাজপোষাক দেখে খানিকটা ভিরমি খাওয়া লাগে। গায়ে টাইটফিট ড্রেস, কোমরে পিস্তল আর ঠোঁটে কড়া লিপস্টিকে সঙ সাজানো হয় চরিত্রকে। নীতা নায়েক এমন কেউ ছিলেন না। দক্ষিণ মুম্বাইয়ের বিখ্যাত সোফিয়া কলেজের গ্র্যাজুয়েট ছিলেন তিনি। একটা দ্বৈত জীবনধারণ করতেন এই মহিলা। শিবসেনার সদস্য হিসেবে কর্পোরেটরের কাজ করতেন, সুন্দরী এবং আকর্ষণীয়া হওয়ায় ক্লায়েন্টদের পটাতে জুড়ি ছিল না তার। পার্টি মাতাতেও ওস্তাদ ছিলেন তিনি, মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে তার ভবিষ্যত উজ্জ্বল হিসেবেই ধরা হচ্ছিল।
আর অন্যজীবনে নীতা সামলাতেন স্বামী গ্যাংস্টার অশ্বিন নায়েকের দুই নম্বরী ব্যবসা আর অবৈধ কার্যকলাপ। স্বামী জেলে থাকাকালীন সময়ে চোরাকারবারী থেকে মাদক পাচার সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। স্বামীর পলিটিক্যাল ইমেজেও ভাটা পড়তে দেননি, স্থানীয় ব্যবসায়ী আর হকারদের থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা উঠতো নিয়মিত, এসবের পাই-পয়সা হিসেব থাকতো নীতার কাছে। আবার এরা যাতে অসন্তষ্ট না হয় এজন্যে চাঁদার হারও বাড়াননি অনেকদিন।
২০০০ সালে নীতা নায়েকের গল্পটা সমাপ্ত হয়ে যায়। বাড়ীর বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। এবং সেটা করা হয় তার স্বামী অশ্বিন নায়েকের আদেশে! নিজের দেহরক্ষীর সঙ্গে প্রেম ছিল এমন সন্দেহে এই খুন করান অশ্বিন। আবার অনেকে বলে পুলিশের গুপ্তচরেরাই নাকী তাকে স্ত্রীর প্রেমের খবর দিয়েছিল। খুনীদের অশ্বিন বলেছিলেন নীতাকে গুলি করার আগে তাকে ফোন করতে। কারণ ‘বিশ্বাসঘাতক’ স্ত্রীর আর্তনাদ শুনতে চেয়েছিলেন তিনি!
স্বপ্না দিদি
তিনি নীতা নায়েকের মতো উচ্চশিক্ষিতা ছিলেন না। কর্পোরেট জগতের সঙ্গেও তার ছিল না কোন দূর দূরান্তের সম্পর্ক। একেবারেই নির্ঝঞ্ঝাট সাংসারিক মহিলা ছিলেন তিনি। স্বামী সংসার নিয়ে সুখে ঘরকন্না করার কথা ছিল তার। কিন্ত সেটা করা হয়নি, তাকে ছুটতে হয়েছে দাউদ ইব্রাহিমের পেছনে, ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মাফিয়াকে খুন করতে ছুটেছিলেন তিনি!
তার নাম নিয়ে ভিন্নমত আছে অনেকের। কেউ বলেন তার আসল নাম ছিল আশরাফ, আবার কারো মতে তার ভালো নাম রহিমা খান। তো আশরাফ বা রহিমা খান যাই হোক, তার বিয়ে হয় মুম্বাইয়ের এক ছোটখাটো গ্যাংস্টার মাহমুদ কালিয়ার সঙ্গে। নিজের সাগরেদ আর সহকর্মীদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে স্ত্রীকে রক্ষা করার জন্যে মাহমুদ সবাইকে বলেন তার স্ত্রীকে দিদি ডাকার জন্যে, তখন থেকেই সবাই তাকে দিদি ডাকতে শুরু করে। মাহমুদ কালিয়া ছিলেন দাউদ ইব্রাহিমের ডি-কোম্পানী গ্যাঙের বিরোধীপক্ষ। দুই দলের সংঘর্ষ হতো মাঝেমধ্যেই, মৃত্যুর ভয় ছিল সবসময়।
তবে মাহমুদ কালিয়ার মৃত্যুটা হলো একটু অন্যরকমভাবে। ডি-কোম্পানী পুলিশকে দিয়ে খুন করায় মাহমুদকে, যেটাকে এনকাউন্টার বলে জানি আমরা। একা হয়ে গেলেন আশরাফ, ভালোবাসার মানুষটাকে হারালেন চিরদিনের মতো। সেখান থেকেই শুরু হলো তার প্রতিশোধ নেয়ার যুদ্ধ!
মুম্বাই পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ইসাক ভগবান। মুম্বাইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চে টানা দশবছর কাজ করেছেন, তীক্ষ নজর রেখেছিলেন স্বপ্না দিদির কার্যকলাপের ওপর। তিনিই বলছিলেন- “অপরাধ জগতের সঙ্গে বিন্দুমাত্র জানাশোনা ছিল না তার, ছিলেন একেবারেই ঘরোয়া মহিলা। ও অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়েছিল শুধু ওর স্বামী হত্যার বদলা নেয়ার জন্যে। পুলিশেও ওর ইনফর্মার ছিল, যারা ওকে দাউদের ব্যবসার খবরাখবর দিতো, দাউদের অবস্থান জানাতো।”
প্রতিশোধ নিতে আরো কিছু গ্যাংস্টারের সঙ্গে দল গঠন করলেন, নাম বদলে রাখলেন স্বপ্না দিদি। খুনী হিসেবে প্রস্তত করতে লাগলেন নিজেকে, বাইক আর জীপ চালানো শিখলেন, সত্তর-আশির দশকে যেটা বিরল ঘটনা ছিল। পুরোপুরি পুরুষে ঘেরা একটা জগতে প্রবেশ করলেন তিনি, এক পুলিশ অফিসারকে বিয়েও করেছিলেন, তার কার্যসিদ্ধিতে সাহায্য পাবার জন্যে। একটা হত্যার ঘটনা সাধারণ এক গৃহবধুকে কতখানি পাল্টে দিল, সেটা শুধু মুম্বাইয়ের ইতিহাস জানে।
দাউদের লোকজনকে অনুসরণ করে স্বপ্না দিদি গিয়েছিলেন নেপালে। সেখানে দাউদের অস্ত্রের চালান একাই ধ্বংস করে দেন তিনি! পুলিশের তথ্যমতে, শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দাউদ ইব্রাহিমকে নিজের হাতে মারার ছক কষেছিলেন তিনি। কিন্ত যাদের তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, তার সেই সঙ্গীরাই বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তার সঙ্গে। দাউদ জেনে গিয়েছিলেন তার কথা, তাকে যতটা নৃশংসভাবে খুন করা যায়, সেভাবে খুনের আদেশ দিয়েছিলেন দাউদ। ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারীতে দাউদের লোকেরা নিজের বাড়ীতে একের পর এক গুলি করে খুন করে স্বপ্না দিদিকে। থেমে গিয়েছিল তার প্রতিশোধের গল্প, যে গল্পে মিশে ছিল অনেকখানি ভালোবাসা!
অপরাধের এই জগতে ঢোকার রাস্তাটা বড় মসৃণ, কিন্ত ফেরার বোধহয় কোন রাস্তা নেই। কিংবা আছে, একটাই পথ, সে পথের নাম মৃত্যু…
তথ্যসূত্র-
https://www.dawn.com/news/1085728
Mumbai Underworld Was Also Ruled By Female Mafia Queens! Read The Stories Of Most Dreaded Women!
buy atorvastatin 80mg pills atorvastatin tablet lipitor 40mg over the counter
lipitor 40mg for sale atorvastatin 40mg without prescription order atorvastatin 80mg online cheap
cipro 1000mg price – myambutol 1000mg generic augmentin 375mg generic
purchase ciprofloxacin without prescription – keflex 250mg uk order augmentin online
glucophage oral – order cipro generic order lincomycin
oral retrovir 300 mg – order avapro generic buy generic zyloprim over the counter
buy zidovudine paypal – allopurinol 300mg ca
buy generic clozaril 50mg – clozaril pills buy pepcid 40mg online
buy clozapine – buy frumil paypal buy pepcid pills for sale