বর্ম’ই হয়ে উঠেছিল বিপত্তির কারণ। ব্যর্থতারও।
বর্ম খুলে বেরোতে পারেনি বলেই সে দিন মহাকাশে পৌঁছতে পারেনি ভারতের প্রথম বেসরকারি উপগ্রহ।
মাটি ছেড়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ‘সীমানা’ ভালয় ভালয় পেরনোর জন্য বেসরকারি উপগ্রহ ‘আইআরএনএসএস-ওয়ান-এইচ’-এর যা ছিল রক্ষাকবচ, ইসরোর ২৪ বছরের রকেট পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকলের (পিএসএলভি) সেই ‘হিট শিল্ড’ গত ৩১ অগস্ট উৎক্ষেপণের পর যে সময়ের মধ্যে খুলে যাওয়ার কথা, খোলেনি। তাই গত ২৪ বছরে যার ব্যর্থতা মেরেকেটে দেড় খানা, ইসরোর বানানো সেই পিএসএলভি সি-৩৯ রকেট সে দিন ব্যর্থ হয়েছিল দেশের প্রথম বেসরকারি উপগ্রহটিকে মহাকাশে পাঠাতে।
কাজটা কী হিট শিল্ডের?
ইসরোর এক মহাকাশ বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাধা পেরিয়ে কোনও উপগ্রহকে কক্ষপথে বসিয়ে দেওয়ার সময় তার চার পাশে প্রচুর তাপশক্তির জন্ম হয়। বায়ুমণ্ডল ফুঁড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রকেটের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণের (ফ্রিকশন) জন্য। হিট শিল্ডের বর্ম না থাকলে সেই প্রচণ্ড তাপশক্তিতে রকেট, উপগ্রহ সবকিছুই জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যেতে পারে। তার হাত থেকেই রকেট ও উপগ্রহকে বাঁচায় হিট শিল্ড।’’
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত ২৪ বছরে পিএসএলভি সি-৩৯’ রকেটের ঝুলিতে রয়েছে ৩৯টি ‘সেঞ্চুরি’ বা সফল উৎক্ষেপণের রেকর্ড। ১৯৯৩ সালে প্রথম উৎক্ষেপণে পুরোপুরি আর বছরকুড়ি আগে ১৯৯৭ সালে উৎক্ষেপণের সময় আংশিক ভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর এই সে দিন, ৩১ অগস্টের আগে আর কখনও ব্যর্থ হয়নি পিএসএলভি রকেট।
কেন বিপত্তি? কেন ব্যর্থ হল এ বার পিএসএলভি?
ইসরো সূত্রের খবর, ওই হিট শিল্ড খুলে বেরতে না পারার জন্য সে দিন আরও এক টন ওজন বেড়ে গিয়েছিল বেসরকারি উপগ্রহটির। কিন্তু অতটা ওজনের পিছুটান থাকলে ‘আইআরএনএসএস-ওয়ান-এইচ’-এর মতো উপগ্রহের পক্ষে নিরাপদে মহাকাসে পৌঁছনো সম্ভব নয়। কারণ, বাহন রকেট পিএসএলভি’কে পিছনে রেখে তাকে ছেড়ে মহাকাশে পাড়ি জমাতে হলে উপগ্রহটির পৌঁছনো উচিত ছিল প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে ৯ কিলোমিটার গতিবেগে।
কিন্তু তার কাঁধে ওজনের বাড়তি বোঝা চেপে যাওয়ায় ওই উপগ্রহটির পক্ষে সেকেন্ডে সাড়ে ৮ কিলোমিটার গতিবেগের বেশি পৌঁছনো সম্ভব ছিল না। ইসরো সূত্রের খবর, ওই পরিস্থিতির জন্যই সে দিন সফল হয়নি উৎক্ষেপণ।
রকেট উৎক্ষেপণের পর কখন কী হওয়া উচিত?
শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণ ইসরোর পিএসএলভি (সি-৩৪) রকেটের
ইসরোর এক পদস্থ কর্তার বক্তব্য, সাধারণত, উৎক্ষেপণের ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পরেই রকেটের হিট শিল্ড খুলে যাওয়া উচিত। আর সেই ‘বর্ম’টা খুলে গেলেই রকেটকে ছেড়ে পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে পড়তে পারে কোনও উপগ্রহ। গর্ভস্থ ভ্রুণ যে অবস্থায় থাকে, রকেটের মধ্যে হিট শিল্ডের আবরণে ঠিক সেই ভাবেই থাকে কোনও উপগ্রহ। পুরোপুরি সঠিক হলে উৎক্ষেপণের ৩ মিনিট ২৩.২৬ সেকেন্ড পরেই ‘বর্ম’ হিট শিল্ড খুলে বাহন রকেটকে ছেড়ে কক্ষপথে ঢুকে পড়তে পারে কোনও উপগ্রহ। কিন্তু গত ৩১ অগস্ট পিএসএলভি রকেটের হিট শিল্ড তার নিজের ওজনের জন্য উৎক্ষেপণের ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড পর থেকেই উপগ্রহটিকে পিছনের দিকে টানতে শুরু করে। ফলে, উপগ্রহটি রকেট ছেড়ে বেরিয়ে কক্ষপথে পৌঁছতে পারেনি।
পিএসএলভি রকেটের মুকুটে কিন্তু গত ২৪ বছরে জুড়েছে অনেক অনেক পালক! ইসরো সূত্রের খবর, ওই রকেটে চেপেই ২০১৫-য় মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল অ্যাস্ট্রোস্যাট। ‘লাল গ্রহ’-এ পাঠানো হয়েছিল ‘মঙ্গলযান’, ২০১৪-য়। আর ২০০৮ সালে চাঁদ-মুলুকে পাঠানো হয়েছিল ‘চন্দ্রযান-১’। এ বছর একই সঙ্গে ১০৪টি উপগ্রহকে মহাকাশে পাঠিয়ে যে বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ইসরো, তাও সম্ভব হয়েছিল এই পিএসএলভি’রই দৌলতে। আর চলতি বছরের জুনে সেনাবাহিনীর ‘কার্টোস্যাট-২’ উপগ্রহ সহ মোট ৩০টি ন্যানো স্যাটেলাইটকেও মহাকাসে পাঠিয়েছিল ইসরোর এই সর্বাধুনিক ও সবচেয়ে সস্তার এই পিএসএলভি রকেটই।
ছবি সৌজন্যে: ইসরো
order atorvastatin generic atorvastatin oral cheap atorvastatin 40mg
cipro 1000mg usa – order cephalexin generic buy generic augmentin 1000mg
glycomet sale – buy cefadroxil 500mg sale lincomycin 500mg brand