অনলাইল শপ তৈরিতে ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

    23
    417

    অনলাইল শপ তৈরিতে যা যা লাগবেঃ

    ১. কি দিয়ে শুরু করবেন।

    ২. পেজ কখন খোলা দরকার।

    ৩. বাজেট কত হওয়া উচিত।

    ৪. প্রোডাক্ট কোথায় পাবেন।

    ৫. ডেলিভারি কি করে দেবেন।

    ৬. স্পন্সর কি করে দেবেন।

    ৭. পরিচালনা (গুরুত্বপূর্ণ) । (বিজনেস ডিল)

    – হয়তো ভাবছেন আপনি এই ব্যপারে কিছু জানি না। প্রথমেই যেটা ভাবুন, কি নিয়ে আপনি শুরু করতে চাচ্ছেন? অনলাইন এ হাজার হাজার শপ আছে, যারা রেগুলার তাদের কে সি ফাস্ট দিয়ে রাখুন। দেখুন ওরা কি নিয়ে কাজ করছে। যেই জিনিস এর ট্রেন্ড কম চালু আছে সেটা নিয়ে শুরু করতে পারেন। যারা একটা ট্রেন্ড চালু করে ভালো ব্যবসা করছে তাদের ফলো করুন।

    – পেজ খুলার জন্য ফেসবুকের Create page অপশন গিয়ে, একেবারেই প্রথম ঘর টিতে ক্লিক করে, সেখান থেকে পেজের কেটাগরি পাবলিক সার্ভিস সিলেক্ট করে, না ঠিকানা দিয়ে পেজ খুলবেন তাহলে আপনি ফেসবুক এর রিভিও অপশন টি পাবেন আর না হয় পাবেন না।

    আপনার প্রোডাক্ট রেডি হওয়ার ৫ দিন আগে থেকে পাবলিসিটি করতে পারেন। এর আগে পেজ খুলে দরকারের বাইরে কোন কিছু পোস্ট করলে সেটা যদি ভিউয়ার লাইক না করে তাহলে ফেসবুক এর নিয়ম অনুযায়ী আপনার পেজের কোন পোস্ট আর সেই ভিউয়ার নিউজ ফিড এ যাবে না।

    – আপনার কত টাকা নিয়ে নামলে হবে সেটা নিয়ে থমকে যান হয়তো। আসলে সেটা ১০ হাজার দিয়েও শুরু করা সম্ভব। আরো কমে অনেকেই করেছেন হয়তো।। আমি নিজের করেছিলাম। ২ মাস এর মাথায় আমার মাসে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার সেল হয় মাসে, 🙂 (আলহামদুল্ললিলাহ)

    প্রোডাক্ট কোথায় পাবেন সবচেয়ে বড় কথা। প্রথম কথাই হচ্ছে আপনাকে অমানুষিক খাটতে হবে আপনার পেজের জন্য। এমন কোয়ালিটির প্রোডাক্ট দিতে হবে যেন যেটা মার্কেটে দাম বেশি এবং আপনার থেকে খারাপ কোয়ালিটি মেইন্টেইন করে । কোয়ালিটির উপরে কোন ওষুধ নাই এই লাইনে।

    কাপড় রিলেটেড যদি কোন প্রোডাক্ট হয় সে ব্যপারে সম্পূর্ন আমি সহয়তা করবো। আমার নিজের ই বাইং হাউজ আছে, ফেক্টরি আছে। যদি কোন কাপড় দিয়ে শুরু করতে চান সে ব্যপারে ফটোগ্রাফি থেকে শুরু করে পাবলিশিং এর দায়িত্ব আমি নিজেই করে দি। আর যদি কসমেটিক বা অন্য সামগ্রি হয় তাহলে নির্ধারিত গ্রুপে হেল্প চেয়ে পোস্ট করুন। তবে যা করেন অবশ্যই কোয়ালিটি ফাস্ট।

    – আপনি হয়তো বাসায় বাসায় গিয়ে দিতে পারবেন না প্রোডাক্ট গুলো, যদি আপনার কোন প্রবলেম না থাকে। সেক্ষেত্রে অনেক কুরিয়ার সার্ভিস আছে যারা ৫০-৭০ টাকার মধ্য কাস্টমারের বাসায় প্রোডাক্ট পৌঁছে দেয়। এক্ষেত্রে ওরা আপনার বাসায় এসে প্রোডাক্ট নিয়ে যাবে আবার বাসায় টাকা দিয়ে যায়। ঢাকার বাহিরের পন্যের ক্ষেত্রে আপনি এস.এ পরিবহনে গিয়ে দিয়ে আসতে পারেন এক্ষেত্রে কাস্টমার এর প্রোডাক্ট এস.এ পরিবহনের শাখা থেকে এসে কালেক্ট করতে হয় নিজ নিজ এলাকার।

    যদি ভেবে থাকেন তাহলে কি ওরা কষ্ট করে এসে নেবে? আসলে নেয় ওরা। সবচেয়ে বেশি বিজনেস আপনার ঢাকার বাহিরেই হবে, এক্ষেত্রে এস.এ পরিবহনের সাথে কোন ধরনের চুক্তি করা লাগে না। আপনি আপনার পার্সেল নিয়ে ওদের কাছে যাবেন অবশ্যই চালান সহ (না থাকলে মাইক্রোস্ট ওয়ার্ডে গিয়ে একটা ডাউনলোড করে নিন অনেক আছে, না পেলে নক দেবেন আমাকে)। বুকিং এর খরচ ওরা ১০০ টাকা রাখবে। প্রোডাক্ট রিসিভ হলে আপনি ওদের কাছ থেকে ফোন পাবেন টাকা রিসিভ করার জন্য। আর যারা প্রোডাক্ট নেবে না সেটা ফ্রি তে রিটার্ন চলে আসবে। (ওরা প্রোডাক্ট হেম্পার করে না)
    ** আমি বাহক কুরিয়ার ব্যবহার করি ১ বছর ধরে।

    – সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট পার্ট। বোরিং হয়েন না, একটু মনোযোগ দিন। স্পন্সর ছাড়া আপনি এই লাইনে দরিদ্র।
    ফেসবুক স্পন্সর হচ্ছে টাকার বিনিময়ে আপনার প্রোডাক্ট টি অন্য কারো নিউজফিড ই পৌঁছে দেয়া। বলতে পারেন কাইন্ড অফ রাস্তার বিল বোর্ড আর কি। এজন্য আপনার একটি মাস্টার কার্ড লাগবে। EBL & BRAC ব্যাংক এর কার্ড দেয় যেটি দিয়ে আপনি স্পন্সর দিতে পারবেন। এড এজেন্সি হয়েছে প্রচুর তাদের দিয়ে ও দেয়াতে পারেন সেক্ষেত্রে তাদের এড একাউন্ট এর পেমেন্ট ডিউ রেখে দেয় কিনা সামনা সামনি চেক করবেন। নিজে দিলে টার্গেটিং বড় একটা ব্যপার। সেক্ষেত্রে প্রোডাক্ট এর ছবি দিয়ে ই-ক্যাব এ পোস্ট করুন কাদের কাদের টার্গেট করবেন। কাওকে না কাওকে পাবেন ই বলে দিবে।
    আমি নিজেই দেই এড। ওলরেডি এক বছরে ৪.৫ লাক্ষ টাকার এড দেয়া শেষ।

    – সবশেষে পরিচালনা। আর একটু বাকি পড়েন এটুকু আরো ইম্পর্টেন্ট।

    আপনি এক্সেল এ একটা ফাইল তৈরি করবেন যেখাবে কাস্টমারের নাম, নাম্বার, ঠিকানা, প্রোডাক্ট, ডেলিভারি ডেট, সেলিং প্রাইস এই টাইপের কিছু ঘর করে যেখানে কাস্টমারদের সব ইনফরমেশন গেদার করতে পারবেন। বিকল্প আছে অনলাইন সফটয়্যার কিন্তু সেটা আপনার জন্য ব্যয়বহুল। ওডার ঠিক মত নিন, ঠিক মত ডেলিবারি করুন।
    আর আপনি যেই প্রোডাক্ট টা ফটোশুট করিয়ে স্পন্সর করাবেন চেষ্টা করবেন সেই প্রোডাক্ট টা কমপক্ষে যেন আপনার কাছে ২০ পিস থাকে সেম জিনিস ই। কেননা আপনি যখন প্রোডাক্ট স্পন্সর দেবেন অথচ একটু পরেই প্রোডাক্ট আউট অফ স্টক অতচ তখনো সেম জিনিসের অর্ডার নিচ্ছেন না সেক্ষেত্রে টেকনিকালি আপনার লস কেননা আপনার ব্যাকরাউন্ডে স্পন্সর রানিং, আর ৫ ডলার এ ভালো প্রোডাক্ট এমনেতেই ১০ টা সেল হয় , টার্গেটিং ঠিক থাকলে।

    পার্টানার ১ জনের বেশি না থাকাটাই শ্রেয় খেয়াল রাখবেন, পেজ কে রেগুলার রাখার চেষ্টা করুন, ঈদে, পুজায়, ছুটিতে পিকচার আপলোড দিয়ে কাস্টমার দের সাথে মিশতে চেষ্টা করুন, কারোও ডেলিভারী ডিলে হলে তাকে ৫% ছাড় দিয়ে দিন। টি-শার্ট গিফ করুন লাকি কয়েক জনকে। (টি-শার্ট বানাতে ১০০ টাকার বেশি খরচ হয় না) ।
    আর কিছু বলার নাই।

    তবে গত ১ বছড় এক্সপিরিমেন্ট এ বলতে পারি। কোয়ালিটি দেবেন মানুষের ভালোবাসা পাবেন, আমার গত ১ বছরে ৩৭০০+ প্রোডাক্ট সেল হয়েছে। দিন টু দিন বাড়ছে। । পেজ এ ১০০ আইটেম দিয়ে হিজিবিজি করবেন না। একটা নিদিষ্ট টাইম ধরুন প্রতি ৩ মাসে প্রোডাক্ট চেঞ্জ করুন। তাহলে অন্য কেউ হয়তো আপনার পেজ সাজেস্ট করতে পারবে ওই পেজ এ এটা পাবেন। কিন্ত হরেক রকম জিনিস থাকলে ব্যপারটা বিধঘুটে। ধরতে পারেন নেলপালিশ এর দোকানে পাঞ্জাবি সেল করা মানায় না আর কি।

    আরো কারো কাছে লাইক ভিক্ষা চাবেন না, নট ইভেন ফেন্ড, স্পন্সর আপনাকে লাইক এনে দেবে, আরো ছোট হোক বড় হোক সবার কাছে সাজেশন চাইবেন, এটাও আপনার পেজের পাবলিসিটি হিসেবে কাজ করবে। (সাজেশন কাজে লাগাতে হবে এমন কোন কথা নেই)।

    ওয়েবসাইট এর জন্য আপাদত storrea.com এ আপনার প্রোডাক্ট গুলোস ফ্রি ওয়েভ করতে পারবেন, প্রথম অবস্থায় ডোমেইন লাগবে না। আর অনেক সাইট থেকে আপনি কল পাবেন আমরা আপনার প্রোডাক্ট বেচে দেব, একাউন্ট খুলে দেব, আমাদের সাইটে ডেলি ১ লক্ষ ভিজিটর, আপনার সেল হবে, শুধু প্রোডাক্টের ১২% দাম আমাদের দেবেন, একেবারেই সোজা বাংলায় না করে দিন, এদের কথায় গলবেন না, প্রথম অবস্থাই এগুলো কিছু দরকার নাই।

    ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আর কিছু দরকার হলে কমেন্ট করবেন অথবা মেসেজ করবেন 🙂

    23 COMMENTS

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here