নাসায় চাকরি পেতে চাইলে এটা পড়ুন

23
351

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। মহাকাশ সম্বন্ধীয় নানা ধরনের গবেষণা ও কর্মকাণ্ড এর মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পরিচালনা, কক্ষপথে স্যাটেলাইট প্রেরণ, মহাকাশ থেকে আবহাওয়ার নজরদারি, সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের তথ্য উদঘাটনে বিভিন্ন মহাকাশ মিশন পরিচালনা, চাঁদ, মঙ্গল বা ইউরোপায় বসবাসের সম্ভাবনা সম্পর্কে গবেষণা প্রভৃতি নানা ধরনের কাজ করে নাসা। তাই নাসায় চাকরি করার জন্য খুব বেশি যোগ্যতার প্রয়োজন হয়।

নাসা এমন একটা সংস্থা চাকরি করতে হলে নানা দিক দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। প্রাথমিকভাবে শিক্ষাগত যোগ্যতার মাণদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। নাসার চাকরির জন্য আগ্রহী হলে আপনাকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশলী, গণিতে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি থাকতে হবে প্রয়োজনীয় কাজের অভিজ্ঞতা। এই ধরনের প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় দলীয় সমন্বয়, যোগাযোগ, ভাষা ও বাজেট সমন্বয়ে অধিক দক্ষ প্রার্থীরা সব সময়ই এগিয়ে থাকেন। বিমান চালনা বিদ্যা, মহাকাশ স্টেশন, সৌর প্রক্রিয়া, তথ্যপ্রযুক্তি, পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহ এই বিষয়গুলোতেও ভালো ধারণা থাকতে হবে চাকরি প্রত্যাশীদের। এই সব যোগ্যতার পাশাপাশি নাসায়  নাসা চাকরি পেতে চাকরি প্রত্যাশীদের শারীরিকভাবেও ফিট থাকতে হবে। ভালো দৃষ্টিশক্তি থাকার পাশাপাশি, রক্তচাপও স্বাভাবিক হতে হবে যা কিনা ১৪০/৯০ হতে হয়। উচ্চতা হতে হবে পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি থেকে ৬ ফুট তিন ইঞ্চি। ইন্টারভিউয়ের বিভিন্ন ধাপে প্রার্থীকে টিকে থাকার এই কঠিন লড়াইয়ে নাসার বাছাই কমিটিকে সন্তুষ্টু করতে হবে। এটা এমনই এক দুর্লভ সুযোগ যে পৃথিবীর হাতে গোনা কিছু মানুষই কেবল চাকরিতে সুযোগ পায়। নাসার যে কোন একটি পোস্টের জন্য কমপক্ষে একশ জন সম যোগ্যতার প্রার্থী থাকে। তাই তাদের সবাইকে পেছনে ফেলে কাঙ্খিত চাকরিটি পেতে হলে যোগ্যতার পাশাপাশি ভাগ্যেরও সহায়তা প্রয়োজন। এমন ঘটনাও ঘটে যেখানে ১০ থেকে ১২ জন লোক নিয়োগের জন্য ২০ হাজারেরও বেশি যোগ্য ব্যক্তি আবেদন করেন। এই ২০ হাজার মানুষেরই চাকরি পাওয়ার মতো সব যোগ্যতা থাকার পরও মাত্র ১০ থেকে ১২ জন নির্বাচিত হন।

নির্বাচিত হওয়ার পরেই কিন্তু নাসার চাকরি চূড়ান্ত বলে ধরে নেওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ এরপরও বেশ কিছু ধাপ পার করতে হবে। দুই বছরের কঠোর প্রশিক্ষণ এবং মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হতে হবে। চার বছরের কলেজ ডিগ্রি অর্জনের জন্য যে ধরনের পরিশ্রম করতে হয় এই দুই বছরে তার থেকে অনেক বেশি চাপ সহ্য করতে হয়। প্রশিক্ষণ নেওয়া দলের সবাইকে যে কোন পরিস্থিতি সামলানোর মতো পরীক্ষাতেও অবতীর্ণ হতে হয় পানিতে সাঁতরানোর অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে। মহাশুন্যে যে ধরনের পরিবেশে কাটাতে হয় তাদের আগে থেকেই সেই ধরনের পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়। জেট এয়ারক্রাফটে শূন্য মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশের সঙ্গেও খাপ খাইয়ে নিতে হয় প্রশিক্ষণার্থীদের।

মহাকাশে গিয়ে একজন নভোচারী কী কাজ করবেন, কীভাবে করবেন সেজন্য একজন নভোচারীর বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষ করতে হয়। এগুলো শুরু হয় তাদের উেক্ষপণ স্থলে পৌঁছানোর অনেক আগেই। যেমন,  কোনো নভোচারীকে মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাসের ‘স্টিন্ট’ এর জন্য কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছর অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ নিতে হয়। কিন্তু মহাকাশে অবস্থান স্মরণীয় হলেও পৃথিবীতে এর জন্য অনেক কাজ করতে হয়। মহাকাশে প্রত্যেক নভোচারীর জন্য পৃথিবীতে এক হাজার মানুষকে প্রকৃতপক্ষে কাজ করতে হয়।

মহাকাশে প্রত্যেক নভোচারী বিশেষ কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান, গবেষণা করা এবং মহাকাশ যানের মেরামত করা। এ কাজেই তাদের বেশিরভাগ সময় ব্যয় হয়।

23 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here