উড়ুক্কু ট্যাক্সি সার্ভিসে এগিয়ে গেল দুবাই

6
318

বিশ্বের বেশিরভাগ মেগা শহরে যানজট নিত্যদিনের চিত্র। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের কারণে নষ্ট হয় কর্মঘণ্টা, জ্বালানি। তবে এই যানজট থেকে মুক্তি দিতে অনেক দিন ধরেই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো উড়ুক্কু গাড়ি আনার ঘোষণা দিয়ে চমক সৃষ্টি করলেও শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সবাইকে চমকে দিয়ে উড়ুক্কু ট্যাক্সি সার্ভিসের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে দুবাইতে। নিজে চড়ে উড়ুক্কু ট্যাক্সির পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামাদান বিন মোহাম্মেদ।

 

শীঘ্রই দুবাইয়ের আকাশে ভাড়াভিত্তিক এই ট্যাক্সি সার্ভিস চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা তৈরি হবে। ড্রোন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই উড়ুক্কু ট্যাক্সি। এই ট্যাক্সিতে একসাথে দুইজন চড়তে পারবেন। দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা ছাড়াই ট্যাক্সিটি চালাতে হবে। সর্বোচ্চ তিরিশ মিনিট আকাশে উড়তে সক্ষম এই যানটি। আর দুর্ঘটনা মোকাবেলায় ট্যাক্সিতে রয়েছে একাধিক ব্যাক আপ ব্যাটারি, একাধিক রোটোর এবং এক জোড়া প্যারোসুট।

 

অভিনব এই ট্যাক্সিটি উন্নয়নের কাজ করেছে জার্মান ড্রোন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ভলোকপ্টার। দুই সিটের ট্যাক্সির উপরে রয়েছে ১৮টি প্রোপেলার।

উড়ুক্কু যান সেবা চালু করা নিয়ে অনেক দিন ধরেই ইউরোপ-আমেরিকা-জাপানের প্রায় এক ডজন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছিল। যানজটের যন্ত্রণা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানই নিজেদের মতো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিল। উড়ুক্কু যান আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিল অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান উবার। এই প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে উবার নিয়োগ দিয়েছে নাসার সাবেক প্রকৌশলী মার্ক মুরেকে। মার্ক মুরে ‘উবার এলিভেট’ বিভাগের এভিয়েশন প্রকৌশলী পরিচালক পদে যোগ দিয়েছেন।

এ উড়ুক্কু যানের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের দিকে অনেকটা এগিয়ে গেছে এয়ারবাস। সমপ্রতি এয়ারবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাফল্যের অনেকটাই দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন তারা। এক ধরনের পপ আপ ব্যবস্থায় বদলে যেতে পারে পুরো প্রক্রিয়াটি। দুই জন যাত্রী বহনের উপযোগী এই যান তৈরির জন্য কোয়াডকপটারের নিচে এক সেট চাকা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।

২০২০ সালের সামার অলিম্পিকের আগেই টোকিওতে উড়ুক্কু গাড়ি আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে টোকিও ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান দ্যা কার্টিভেটর প্রজেক্ট। তাদের এই কাজের পেছনে বিনিয়োগ করছে জাপানের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা। কার্টিভেটরের ডিরেক্টর রাইতারু মোরির মতে, উড়ুক্কু এই গাড়িকে স্কাইড্রাইভ নামে বিবেচনা করা হচ্ছে। এতে তিনটি চাকা, চারটি রোটর এবং ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে চলতে সমর্থ হবে। এটি লম্বায় সাড়ে ৯ ফুট, ৪.২ ফুট চওড়া এবং ৩.৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট। এক জনের চলার উপযোগী এই উড়ুক্কু গাড়িটিকেই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গাড়ি হিসেবে অনুমান করা হচ্ছিল।

তবে এই ইঁদুর দৌঁড়ে সবাইকে পেছনে ফেলে সাফল্য দেখাতে সমর্থ হয়েছে ভলোকপ্টার। স্মার্টফোনের একটি অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই ডেকে নেওয়া যাবে উড়ুক্কু ট্যাক্সি। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছানোর অভিজ্ঞতা অনেকের কাছেই যাদুর মতই মনে হতে পারে।

6 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here