ব্লগিংয়ে ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম ৫ কারন…

8
458

অনেক আশা ও উত্তেজনা নিয়ে শুরু করেছেন ব্লগিং। অন্যরা এ কাজ থেকে অনেক আয় করছে সে অনুপ্রেরণায় আপনিও নাম লিখিয়েছেন ব্লগার হিসেবে। প্রথম দিকে নবীন এসব ব্লগার যতটা উদ্যোমী থাকেন পরে নানা কারণে তাতে ভাটা পড়ে।

নবীনরা যখন ব্লগিং সাইট খোলার সিদ্বান্ত নেয়, তখন নানা রকম জড়তা তাদের আকড়ে ধরে। যার কারণে তারা সফল হতে পারে না কিংবা অনেকে এ কাজে ইস্তফা দেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্লগই শুরুর চার মাসের মাথায় বন্ধ হয়ে যায়।

বিশ্বে প্রতিদিন ১ লাখ ৭২ হাজারের বেশি ব্লগ সাইট খোলা হয়। তাহলে এত ব্লগ ঝরে পড়ে কেন- তার কিছু কারণ নিয়ে আজকের পোস্ট

কঠোর পরিশ্রম করার ভয়
ব্লগিং করাটা প্রচুর পরিশ্রমের কাজ। এখানে ভালো কিছু করতে হলে আপনাকে অবিশ্বাস্যভাবে পরিশ্রম করতে হবে। প্রথমে অনেক সময় ব্যয় হবে কনটেন্ট তৈরি ও প্রমোশনের কাজে।

আপনি যদি ব্লগটাকে একটা ভাল পর্যায়ে দাঁড় করাতে চান তাহলে এসইও নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যান্য ব্লগারদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে ও অবশ্যই ভালো পোষ্ট লিখতে হবে। প্রথমে যখন অনেকে ব্লগিং শুরু করেন, তখন তারা ভাবেন যে এটা ডালভাতের মতো ব্যাপার। তবে কিছু সময় যাওয়ার পর রেসপন্স কমে গেলে তারা বোঝেন বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। তখন অনেকেই ভয় পেয়ে তা ছেড়ে দেয়।

যারা কম পরিশ্রমে বেশি ফল আশা করেন তারা সাধারণত সহজ ও ফানি কাজ খুঁজে থাকেন। তবে সফল ব্যক্তিরা হন এর উল্টো। তারা চ্যালেঞ্জিং কাজ খোঁজেন, নিয়ম মেনে যথাসময়ে তাদের কাজ শেষ করেন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেন।

ব্লগিংয়ের জন্য কিছু সংখ্যক ভালো আইডিয়া জেনেরেটের মাধ্যমে আপনি সবসময় ফোকাসড থাকতে পারেন। মাঝেমধ্যে অন্যান্য স্থানীয় ব্লগারদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। তাদের নিয়ে একটি মাস্টারমাইন্ড গ্রুপ তৈরি করতে পারেন।  সমমনা ব্যক্তিদের সাথে বেষ্টিত থাকাটা আপনার অনেক কাজে আসবে।

আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্লগের সফলতার প্রতি কমিটেড হতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণের মাধ্যমে আপানার কাজ শেষ করতে হবে। নিয়ম মেনে এ কাজগুলো করতে থাকলে ব্লগিংকে খুব বেশি কঠিন মনে হবে না। আর সাফল্য ধরা দিতে থাকলে তখন এতটুকু পরিশ্রমকে কিছুই মনে হবে না, কেননা দীর্ঘমেয়াদীতে ব্লগিং অনেক ভালো কিছু দিয়ে থাকে।

তীব্র প্রতিযোগিতার ভয়
অনেকে ব্লগিংয়ের শুরুতে চিন্তা করেন, তারা যা লিখছেন পাঠক সহজেই তা খুঁজে পেয়ে যাবেন । কিছু দিন পরেই অবশ্য তাদের এ ভুল ভেঙ্গে যায়। তারা বোঝেন তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে পাঠক তাদের সহজেই খুঁজে পান না।

প্রতিযোগিতার মধ্যে খেই হারিয়ে নবীন ব্লগাররা ভয় পেয়ে যান এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ছেড়ে দেন। এদের অনেকের জানা নেই বর্তমানে যারা প্রভাবশালী ব্লগার এদের অনেকেই বছরের পর বছর সময় ব্যয় করেছেন শুধু বিশাল আকারের পাঠক শ্রেণী তৈরির পেছনে। সে সময়টা নবীনদের কাছে রীতিমত ভীতিকর কিছু হতে পারে।

নবীনদের মধ্যে এমন ভাবনা তৈরি হতে হবে তারাও প্রতিযোগিতায় ভালো করতে পারবেন। বর্তমানে যেসব কনটেন্ট আছে ও প্রমোশন কৌশল রয়েছে সেগুলোর চেয়ে তিনি ভালো কিছু করতে পারবেন।

সফল ব্লগাররা জানেন তার যথেষ্ট ভালো মান আছে পাঠকদের নতুন কিছু দেওয়ার মতো। যতই প্রতিযোগিতা থাকুক না কেন, তারা ঠিকই পাঠক তৈরি করার কৌশল বের করে নেন।

ব্লগে সেল করার ভয়
অনেক ব্লগারই মনে করেন আর্টকেলের সঙ্গে কিছু বিজ্ঞাপন ও অ্যাফিলিয়েট লিংক দিলে তিনি অর্থ উপার্জন  করতে পারবেন। এ প্রক্রিয়া যখন কাজ করে, তখন এটা প্রচুর ট্রাফিক নিয়ে আসে।

তাই আপনিও পণ্য, সেবা বা  নিজস্ব কোর্স বিক্রি করতে পারেন পাঠকদের কাছে। তখন আপনার অডিয়েন্স অনেক কম থাকলেও এটি আপনার ব্লগকে মনেটাইজ করার একটি কার্যকর উপায়।

আপনার মধ্যে সৃষ্টিশীল মানসিকতা তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে বিনামূল্যে অনেক তথ্য দেওয়ার মত চিন্তা থাকতে হবে। তথ্য বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করার আইডিয়াটা আপানার কাছে ‘অস্বাভাবিক’ মনে হতে পারে।

তবে তথ্য বিক্রি করার দক্ষতা ব্লগিং থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এ দক্ষতা আপনাকে শিখতে হবে। আর হ্যাঁ, আপনাকে বুঝতে হবে, কোন তথ্য পাঠকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা কখনও কখনও তা কিনতে চাইতে পারে।

পরিবর্তনের ভয়
কিছু মানুষ আছে যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়। একজন সফল ব্লগার হতে হলে আপনাকে পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ঘন ঘন পরিকল্পনা ও কনটেন্ট বদল করতে হলে অনেকে ভেবে থাকেন লেখার মান ঠিক রাখা যাবে না। পাঠকদের খুশি রাখতে পারবেন না বলেও অনেকের মধ্যে আশংকা থাকে।

এ ক্ষেত্রে একজন সফল ব্লগার হতে আপনাকে অবশ্যই আপনার মূল বৈশিষ্ট্য ঠিক রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, অতীতে যেভাবে আপনি খাপ খাইয়ে নিয়েছেন ভবিষ্যতেও সেভাবে করবেন।

ব্যর্থ হওয়ার ভয়
যখন কেউ ব্লগিং শুরু করে, তখন তার সবচেয়ে বেশি ভয় থাকে ব্যর্থ হওয়ার। খুবই প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে, ব্যর্থতাই সফলতার চাবিকাঠি। তাই ব্যর্থ হওয়ার ভয় পাবেন না। কারণ ব্যর্থতাও ক্ষণস্থায়ী।

বারবার চেষ্টার পর দেখবেন আপনার ব্যর্থতা থেকেই দারুণ কিছু তৈরি হয়েছে। ওই অভিজ্ঞতা আপনাকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।

8 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here