4G -এর দেশে স্মার্টফোনের গ্রাহক কমছে…!

3
352

থ্রিজিকে পেছনে রেখে ক’দিন পরেই দেশে চালু হচ্ছে ফোরজি। অথচ এই সময়ে কমে গেছে স্মার্টফোনের আমদানি ও ব্যবহার বৃদ্ধির হার।

বিষয়টিতে বিস্মিত আমদানিকারকরা, ভাবনায় মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোও। দেশে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ফিচার ফোন বা বার ফোনের তুলনায় স্মার্টফোনের আমদানি বাড়ছিল। ২০১৭ সালের প্রথম নয় মাসের আমদানি চিত্রে দেখা যায়, সেই বাড়তির হার নামছে।

জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর -এই নয় মাসে সব মিলে ৬৪ লাখ ৫৫ হাজার স্মার্টফোন বৈধ পথে আমদানি হয়েছে। আর একই সময়ে মোট আমদানির পরিমাণ হলো দুই কোটি ৭৪ লাখ। ফলে মোট হ্যান্ডসেটের ২৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ হচ্ছে স্মার্টফোন।

সেখানে ২০১৬ সালে আমদানি করা তিন কোটি ১১ লাখ হ্যান্ডসেটের ২৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ ছিল স্মার্টফোন।

হ্যান্ডসেট আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআই) পরিচালক রেজওয়ানুল হক টেকশহরডটকমকে বলেন, বিষয়টির পরিষ্কার কারণ খুঁজছি আমরাও। তবে স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ এর দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে। এছাড়া দেশে দ্বিগুনের বেশি শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় দাম আনুপাতিক হারে কমেনি।

স্মার্টফোন টেকনো ও ফিচারফোন আইটেল ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক ট্রানশান হোল্ডিংস বাংলাদেশের এই সিইও জানান, দেশের স্মার্টফোন ব্যবহারের ইকো সিস্টেম এখন সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি।

‘দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ পনের’শ টাকা বা এর আশেপাশের মূল্যের ফিচার ফোন ব্যবহার করে। তাদের জন্য স্মার্টফোনের দামের সঙ্গে সক্ষমতা মেলানো বড় বিষয়। এছাড়া একজন গ্রাহক স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলেই তো ডিভাইসটি কিনবে।’-বলছেন রেজওয়ানুল।

হ্যান্ডসেট আমদানিকারকদের অনেকে আবার চলতি বছরের দুই দফার বন্যা এবং অতিবৃষ্টিকেও এর কারণ মনে করছেন।

তারা বলছেন, এই দুর্যোগে হ্যান্ডসেট বিপণনের ক্ষেত্রে বড় রকমের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ঢাকায় টানা অতিবৃষ্টির কারণে হ্যান্ডসেটের কেনাবেচার ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া বছরের মাঝামাঝি সময়ে উত্তরবঙ্গের বন্যা, তার আগে হাওর এলাকার বন্যার কারণেই ওই সব এলাকায় এবং ঢাকাতেও তার প্রভাব পড়েছে।

২০১৩ সালের একেবারে শেষের দিকে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো দেশে থ্রিজি সেবা চালু করে। তখন থেকেই দেশে থ্রিজি হ্যান্ডসেটের আমদানি বাড়তে থাকে।

মোবাইল অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব এবং প্রধান নির্বাহী টিআইএম নূরুল কবীর টেকশহরডটকমকে বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে স্মার্টফোনের দাম বেড়েছে। দেশে স্মার্টফোন উৎপাদন, বিপণন ও গ্রাহকের কাছে যাওয়া পর্যন্ত সময়ের দরকার ছিল। এই সময়ে বাড়তি শুল্ক না থাকলে যথারীতি দাম কমতো এবং স্মার্টফোন পেনিট্রেশন বাড়তো।

বাড়তি দামের কারণে মানুষের ক্রয় সক্ষমতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্মার্টফোন ব্যবহারের ইকোসিস্টেমও স্মার্টফোন ব্যবহারের হার না বাড়ার বড় কারণ। যেখানে সেবা প্রাপ্তি ও মানের বিষয় উল্লেখযোগ্য।

বিএমপিআই-এর হিসাব অনুসারে ২০১২ সালে মোট আমদানি হওয়া হ্যান্ডসেটের মাত্র তিন শতাংশ ছিল স্মার্টফোন। পরের বছর সেটি ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে উঠে আসে।

আর ২০১৪ সালে একটা বড় রকমের উন্নতি হয়ে মোট আমাদানি করা হ্যান্ডসেটের ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ চলে আসে স্মার্টফোনের দখলে। ২০১৫ সালে মোট আমাদনিকৃত হ্যান্ডসেটের ২১ শতাংশ আসে স্মার্টফোন।

এবারের ঘটনায় আমাদানিকারকরা অবশ্য মোবাইল ফোন অপারেটরদের থ্রিজি সেবার গুণগত মান নিয়েও নানা প্রশ্ন করেছেন। আর সে কারণেই আগের মতো গ্রাহকরা আর স্মার্টফোনের প্রতি অতটা অগ্রহী নন বলেও মনে করেন কেউ কেউ।

3 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here