সিটিসেল কার জন্যে কাজ করছে?

24
383

বেশ কয়েকবার চেষ্টার পরও শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয়নি সিটিসেল।

কিন্তু গত বছরের অক্টোবর থেকে অপারেটরটি যখন সেবার বাইরে রয়েছে তখন আবার ফোরজিতে তাদের আগ্রহ দেখে প্রশ্ন, কাদের জন্যে কাজ করছে দেশের সবচেয়ে পুরনো অপারেটরটি ?

বৃহস্পতিবার ফোরজির জন্যে স্পেকট্রাম নিলামের প্রি-বিড বৈঠকে সিটিসেলের দুইজন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। তবে তাদের কেউই বলতে পারেন না যে কারা এই মৃতপ্রায় কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।

‘আমাদেরকে বলা হয়েছে প্রস্তুতি নিতে তাই আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করছি।’ প্রতিনিধিদের দুইজনের একজন বলছিলেন।

তবে অপারেটরটির সূত্র বলছে, দুই বছর আগে সিটিসেল কিনে নেওয়ার আলোচনায় একটি আমেরিকান কোম্পানির নাম এসেছিল। মূলত তাদের মৌখিক অনুরোধের প্রেক্ষিতেই সিটিসেলের কর্মীরা ফোরজির জন্যে প্রয়োজনীয় দাফতরিক কাজকর্ম করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটিসেলের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলছেন, যেহেতু কোনো দলিলপত্রই হয়নি। তাই চূড়ান্ত করে কিছু বলা যাবে না। কিন্তু যতোটুকু আলোচনা হয়েছে তার পুরোটাই মৌখিক পর্যায়ের।

আলোচনার মধ্যে সংশয়ও আছে। কারণ সিটিসেল আদৌ ফোরজির লাইসেন্স পাওয়ার জন্যে উপযুক্ত অবস্থায় আছে কিনা । আর সে কারণেই বৃহস্পতিবারের প্রি-বিড বৈঠকে বিটিআরসির কাছে সিটিসেলের প্রতিনিধিদের প্রধান এবং একমাত্র প্রশ্ন ছিল তাদের সংশয় দূর করে দেওয়া।

বিটিআরসি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সব নথিপত্র পর্যালোচনা করে তবেই সিটিসেলকে জানাবে যে তারা আবেদেন করার জন্যে উপযুক্ত কিনা।
তবে সিটিসেলের কর্মীরা মনে করছেন, বিটিআরসির সঙ্গে তাদের কিছু ঝামেলা থাকলেও পুরো বিষয়টি এখন আদালতে আছে। যেহেতু বিচারাধীন বিষয় তাই সিটিসেলের আবেদন করতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।

সংশ্লিষ্ট অনেকে বলছেন, সুযোগ রাখার পরেও যেহেতু নতুন কোনো অপারেটরকে পাওয়া যায়নি। সে কারণে বিসিটিআরসিও চায় সিটিসেল প্রতিযোগিতায় থাক। তা না হলে পুরো নিলাম এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াই এক তরফা হয়ে যাবে।

বিটিআরসিও মনে করছে ফোরজি ইস্যুতে বড় তিন অপারেটর এক জোট হয়ে কাজ করছে। আর সে কারণে তারা সরকারের ওপর নানা চাপও তৈরি করতে পারছে। এখন আবার যেহেতু নতুন কোনো অপারেটরকে পাওয়া যায়নি তাই এই চাপ আরও বাড়তে পারে।

এক্ষেত্রে টেলিটকের সঙ্গে সিটিসেলকে নামকাওয়াস্তেও যদি ফিরিয়ে আনা যায় তাহলেও কিছুটা চাপ কম হবে। আর এসব মিলিয়েও সিটিসেলের ফোরজির লাইসেন্স পাওয়া বা স্পেকট্রামের নিলামের বসতে পারার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তবে বিটিআরসি’র কর্মকর্তারা বলছেন, বৈঠকে অংশ নেওয়া মানেই তো আর ফোরজি’র লাইসেন্স নিয়ে নেওয়া নয়। তবে আবার কেউ বৈঠকে না এসেও লাইসেন্সের জন্যে আবেদন জমা দিতে পারে বা স্পেকট্রামের নিলামে অংশ নিতে পারে।

‘সুতরাং আজকের বৈঠকের উপস্থিতি দেখে এটা অন্তত বলা যাচ্ছে না যে সিটিসেল ফোরজিতে আছে, বা নতুন কেউ কেউ নেই।’ বলছিলেন প্রি-বিড বৈঠকে বিটিআরসির এক শীর্ষ কর্মকর্তা ।

বিটিআরসি সূত্র বলছে, এর আগে থ্রিজির সময়েও সিটিসেল লাইসেন্স নেওয়া এবং স্পেকট্রাম নিলামের বসার জন্যে আবেদন জমা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা আর এগোয়নি।

অন্যদিকে আবার থ্রিজির সময় যেমন অনেক চেষ্টা করেও বিটিআরসি নতুন কোনো অপারেটরকে আগ্রহী করতে পারেনি। তবে এবারও ফোরজির জন্যে নতুন একটি অপারেটরের আসার সুযোগ রেখে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদও কয়েকদিন আগে দুটি আগ্রহী অপারেটরের কথা বলেছেন।

এদিকে আগামী ১৪ জানুয়ারি ফোরজি লাইসেন্স নিতে আবেদন করা যাবে। আর ১৩ ফেব্রুয়ারি স্পেকট্রাম নিলামের সময় নির্ধারণ করেছে বিটিআরসি।

আবেদন নেওয়ার পর বিটিআরসি যোগ্য আবেদনকারীর তালিকা প্রকাশ করবে ২৫ জানুয়ারি। ২৯ জানুয়ারি নিলামের নিয়মকানুন নিয়ে আলোচনা হবে। ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিড আর্নেস্ট মানি জামা দিতে হবে যোগ্য প্রার্থীদেরকে। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি নিলামের চিঠি প্রদান এবং ১২ ফেব্রুয়ারি হবে নিলামের মহড়া।

১৩ ফেব্রুয়ারি নিলাম এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি নিলামে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে বিটিআরসি।

প্রয়োজনীয় হলে পোস্টটি শেয়ার করুন।
ধন্যবাদ, itdoctor24.com এর সাথেই থাকুন।

24 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here