মুস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে উদ্বেগ

0
64

ভারতে টি২০ বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ আগামীকাল (বুধবার) ধরমশালাতে মুখোমুখি হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের।
বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে যেতে হলে বাংলাদেশকে তাদের গ্রুপ এ-তে চ্যাম্পিয়ন হতেই হবে, কাজেই গ্রুপের তিনটি ম্যাচের কোনটিরই গুরুত্ব কম নয়।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মোর্তজা স্বীকার করেছেন, ধরমশালার ঠাণ্ডা আবহাওয়া আর দলে চোট-আঘাতের সমস্যা তাদের কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে রেখেছে।
বিশেষ করে তারকা বোলার মুস্তাফিজুর রহমান মাঠে নামতে পারবেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়। দলের একজন সদস্য বলেন, মুস্তাফিজের মাঠে নামার সম্ভাবনা “ফিফটি-ফিফটি।”
অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস দলের অধিনায়ক পিটার বোরেন বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশ এই ম্যাচে পরিষ্কার ফেভারিট হলেও তারাও রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেই এসেছেন এবং ভাল ফলের ব্যাপারেও আশাবাদী।
বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে যেতে হলে বাংলাদেশকে তাদের গ্রুপ এ-তে চ্যাম্পিয়ন হতেই হবে, কাজেই গ্রুপের তিনটি ম্যাচের কোনওটিরই গুরুত্ব কম নয়।
নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বাংলাদেশের টোয়েন্টি টোয়েন্টি ও ওয়ানডে-তে মুখোমুখি দেখা হয়েছে দুবার করে – আর দুই ফর্ম্যাটেই ফলটা ১-১।
কাজেই কাগজে-কলমে অন্তত নেদারল্যান্ডসকে হালকা করে দেখার কোনও সুযোগ নেই বাংলাদেশের, যদিও বলতেই হবে সাম্প্রতিক ফর্মের বিচার মাশরাফি মোর্তজার দল নি:সন্দেহে অনেকটাই এগিয়ে।
ঠাণ্ডা আর চোট নিয়ে উদ্বেগ
কিন্তু এশিয়া কাপ খেলার ক্লান্তি কাটিয়ে সটান অন্যরকম পরিবেশ আর ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় এসে পড়া বাংলাদেশকে যে খুব একটা স্বস্তিতে রাখছে না, মাশরাফি তা নিজেই স্বীকার করলেন মঙ্গলবার প্র্যাকটিস সেশনের পর পরই।
“ভারতের কন্ডিশন অনেকটা আমাদের দেশের মতো হলেও ধরমশালার ব্যাপারটা আলাদা। এখানে দেখছি দিনে বেশ গরম হলেও রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা – আর আমাদের দুটো ম্যাচই রাতে। যদিও সেটা পরের কথা, কালকের ম্যাচটা দিনে – ওটা নিয়েই এখন ভাবছি। প্র্যাকটিসে দৌড়তে গিয়ে দেখলাম বেশ কয়েকজনের কিন্তু ব্রিদিং ট্রাবল হল। ফলে একটু আগে ধরমশালায় পৌঁছতে পারলে ভাল হত, কিন্তু ওটা তো আর আমাদের হাতে ছিল না।”
বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারেরই ভারতে খেলার কোনও অভিজ্ঞতা নেই – ধরমশালায় তো প্রায় কারোরই নেই। তার ওপর চোট আঘাতের সমস্যাতেও দল জর্জরিত।
দলের বোলিংয়ের প্রধান অস্ত্র মুস্তাফিজুর রহমান এদিনও নেট প্র্যাকটিসে বসেই ছিলেন, বুধবারের ম্যাচে তার খেলা পুরোপুরি অনিশ্চিত। এশিয়া কাপে পাওয়া চোট এখনও পুরোটা সারেনি সাকিব আল হাসানের, তবে তারপরও তিনি খেলবেন।
বাংলাদেশকে ভয় পাচ্ছিনা : বোরেন
তবে বাংলাদেশ দলে এমন ছোটখাটো সমস্যা থাকলেও নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক পিটার বোরেন বলছিলেন তারা প্রতিপক্ষকে সমীহ করছেন, তবে ভয় পাচ্ছেন না।
“শেষবার বছরকয়েক আগে যখন আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে খেলি তার চেয়ে দলটা এখন অনেক বদলে গেছে। বেশ কিছু ভাল সিমার আছে ওদের দলে, বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ তো খুব ভাল করছে – আমি আল আমিনের কথাও বলব। আর স্পিনটা বরাবরই তাদের জোরালো দিক, সাকিব তো দুর্দান্ত। তবে আমরাও ওদের নিয়ে সব রকম হোমওয়ার্ক করেই মাঠে নামছি।”
ওদিকে মুস্তাফিজুরকে ঘিরে দুশ্চিন্তা ছাড়াও মাশরাফির জন্য দলের ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করাটাও এখন একটা বড় সমস্যা। এশিয়া কাপ ফাইনালে তার দুর্দান্ত ইনিংসের পর মাহমুদউল্লা রিয়াদকে ওপরের দিকে তুলে আনার দাবি জোরালো হয়েছে – কিন্তু মাশরাফি তার পরও ইঙ্গিত দিলেন তিনি এই মুহূর্তে ব্যাটিং অর্ডারে খুব বেশি ওলটপালট করার পক্ষপাতী নন।
“যখনই কেউ লোয়ার অর্ডারে ভাল করে তখনই এই কথাটা বলা হয়, একজনকে তুলতে গিয়ে দুজনকে হারানোটা কতটা সমীচীন সেটাও ভাবতে হবে। আর বেশি নাড়াচাড়া করাটাও বোধহয় ঠিক না। তবে হ্যাঁ, রিয়াদকে আমরা আরও বেশি ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিতে চাই – আর সেটা দলের প্ল্যানের ভেতরে থেকেই”।
বাংলাদেশের প্ল্যানিং যাই থাকুক, পিটার বোরেন অবশ্য বলেন তারা ভাল প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং ভাল ফলের আশাই করছেন।
নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক আশাবাদী হলেও এই বাস্তবতাটা অবশ্য স্বীকার করছেন যে এ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ নি:সন্দেহে ফেভারিট।
তবে ধরমশালায় যখন-তখন বৃষ্টি এসে ম্যাচের ওভার কমিয়ে দিতে পারে, আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।
তার ওপর টিটোয়েন্টির যাবতীয় অনিশ্চয়তা তো থাকছেই, ফলে বুধবারের ম্যাচে বাংলাদেশের হাসতে হাসতে জেতা উচিত তা কেউই বলছেন না। ক্রিকেট পণ্ডিতরা নন, মাশরাফি বা পিটার বোরেনও নন।

Comments

facebook comments

Please comment Here (ভাল লাগলে কমেন্ট করুন)