কম
hনিত্যনতুন স্মার্টফোন গ্রাহক পর্যায়ে পৌছিয়ে দিয়ে দেশের বাজারে ইতোমধ্যে এক আস্থার ব্রান্ড এ পরিনত হয়েছে ওয়ালটন।এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটি স্বল্প বাজেটের ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে দেশের বাজারে নিয়েছে প্রিমো জিএইচ ৬ নামের নতুন একটি স্মার্টফোন। ১ জিবি র্যাম ও ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা বিশিষ্ট ৫ ইঞ্চি এই ফোন টি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬,২৯০ টাকায় । ওয়ালটন এই ফোনটিতেই প্রথম এন্ড্রয়েড এর সর্বশেষ ভার্সন মার্শম্যালো ব্যবহার করেছে !
আজ হাজির হয়েছি এই ফোন টির এক্সকুলুসিভ হ্যান্ডস-অন-রিভিউ নিয়ে।
একনজরে Walton Primo GH6:
- ৭২০পি রেজুলেশন এর ৫ ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে।
- থ্রিজি নেটওয়ার্ক এর সুবিধাসহ ডুয়াল সিম।
- ১ গিগাবাইট র্যাম।
- ৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ।
- ১.৩ গিগাহার্জ গতির কোয়াড কোর প্রসেসর।
- মালি ৪০০ জিপিইউ।
- ৮ মেগাপিক্সেল এর রিয়ার ও ৫ মেগাপিক্সেল এর ফ্রন্ট ক্যামেরা।
- ২,০০০ মিলিএ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি।
আনবক্সিংঃ
ফোনটি আননক্স করলে আপনি পাবেন, একটি চার্জিং এডাপ্টার, একটি ইউএসবি ডেটা ক্যাবল, ইউজার ম্যানুয়াল, ওয়ারেন্টি কার্ড ও ইয়ারপিচ বা হেডফোন।
ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটিঃ
নতুন এই হ্যান্ডসেট টির ডিজাইন ওয়ালটন এর প্রিমো জিএইচ সিরিজের পূর্ববর্তি ডিভাইজ গুলো থেকে কিছুটা আলদা । এই ডিভাইসটিতে এ্যালুমিয়াম মেটাল বডি ব্যবহার করা হয়েছে,যা ডিভাইস টিতে এনে দিয়েছে প্রিমিয়াম লুক!
এছাড়া ৫ ইঞ্চির এই ডিভাইস টি অনেকটা হালকা গড়নের। ৫ ইঞ্চি হওয়ার কারনে এটি সহজেই এক হাত এ ধরে ব্যবহার করা যায়।
ডিভাইস এর ফ্রন্ট প্যানেল এর একেবারে উপরের দিকে রয়েছে স্পিকার,ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরা ও প্রক্সিমিটি সেন্সর।
আর ডিসপ্লের একেবারে নিচের দিকে রয়েছে তিনটি টাচ ক্যাপাসিটিভ বাটন।
ফোন টির ডান পাশে রয়েছে লক বাটন ও ভলিউম রকার। আর উপরের দিকে থাকছে ৩.৫ এম.এম অডিও জ্যাক পোর্ট।
আর এ্যালুমিনিয়াম মেটালিক ফিনিশ করা ব্যাক সাইডের উপরের দিকে কোনায় থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল এর রিয়াল ক্যামেরা ও এলইডি ফ্ল্যাশ।
ডিসপ্লেঃ
এই ফোন টিতে ৫ ইঞ্চির ৭২০ পিক্সেল আইপিএস ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। যা কিনা ১৬.৭ মিলিয়ন কালার দেখাতে স্বক্ষম। স্বল্প বাজেটের ফোন হিসেবে এই ফোন টির ডিসপ্লেকে ভাল বলতেই হবে !
ব্যাটারিঃ
ফোনটিতে ২০০০ মিলিএ্যাম্পিয়ার লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনটির ডিসপ্লে মাত্র ৫ ইঞ্চির ও প্রসেসর এর গতি ১.৩ গিগাহার্জ হওয়ার কারনে, এই ব্যাটারি থেকেই বেশ ভাল মানের ব্যাক-আপ পাওয়া যায়। একবার ফুলচার্জ করে নিলে, মধ্যম ব্যবহারে একজন ব্যবহারকারি ডিভাইসটিকে সারদিন অনায়েসেই ব্যবহার করতে পারবেন । এছাড়া থাকছে বিভিন্ন পাওয়ার সেভার অপশন ,যার মাধ্যমে ব্যবহারি চাইলে অতিরিক্ত ব্যাক-আপ পেতে পারেন ।
এছাড়াও থাকছে সুপার পাওয়ার সেইভিং মোড। যা দ্বারা জরুরী পরিস্থিতে অল্প চার্জেই দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফোন চালু রেখে কল, এসএমএস,এলার্ম ইত্যাদি জরুরী ফিচার গুলো ব্যবহার করতে পারবেন।
কানেক্টিভিটিঃ
ডুয়াল সিম বিশিষ্ট এই ফোনে একটি রেগুলার ও আরকটি মাইক্রো সিম স্লট ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফোনটিতে থাকছে থ্রিজি ব্যবহারের সুবিধা।
এছাড়াও এই ফোনটিতে ওয়াই-ফাই,ওয়াই-ফাই ডিরেক্ট, জিপিএস,এফএম রেডিও,ওটিজি, ইউএসবি ২.০ প্রভৃতি কানেক্টিভিটি সুবিধা তো থাকছেই।
ইউজার ইন্টারফেসঃ
এই ফোনটি এন্ড্রয়েড এর সর্বশেষ সংস্করন মার্শম্যালো চালিত কোম্পানিটির প্রথম স্মার্টফোন । এন্ড্রয়েড এর সর্বশেষ সংস্করন ব্যবহারের কারনে ফোনটির ইউজার ইন্টাফেশ বেশ স্মুথ। এন্ড্রয়েড এর এই ভার্শন টি ব্যাটারি বান্ধব হওয়ার কারনে ফোনটির ব্যাটারি ব্যাক-আপ নিয়ে ব্যবহারিদের দুঃচিন্তা করতে হবে না।
দেখে নিন এই ডিভাইসের ইউজার ইন্টারফেস এর কিছু ছবিঃ
পারফর্মেন্সঃ
এই ডিভাইসটিতে ১.৩ গিগাহার্জ গতির কোয়াডকোর প্রসেসর ও ১ গিগাবাইট র্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি জিপিইউ হিসেবে রয়েছে মালি ৪০০ । এই ডিভাইসটি ব্যবহারে অনাকাংখিত কোন ল্যাগিং ইস্যু পাওয়া যায় নি।
স্মার্টফোন এর পারফর্মেন্স যাচাই এর এ্যাপ আনটুটু বেঞ্চামার্ক এ এর স্কোর এসেছে ২৩,৯০৪। পাশাপাশি মাল্টিটাস্কিং পারফরমেন্স যাচাইয়ের এ্যাপ গিগবেঞ্চ এ এর স্কোর এসেছে ৩৫৩ (সিংগেল কোর) ও ১১৩২ (মাল্টি-কোর) ।
আর গ্রাফিক্স পারফর্মেন্স যাচাই এর এ্যাপ নেনামার্ক ২ তে এর স্কোর ৪৯.২ ।তাই এই ফোন এ কোন রকম ল্যাগ ছাড়া অনায়েসেই সব হাই-ডিফিনেশন গেম খেলা যাবে। এই ফোনের দ্বারা মিডিয়াম গ্রাফিক্স এর গেম গুলো কোনধরনের ল্যাগ ছাড়াই খেলা যাবে।
দেখে নিন বেঞ্চমার্ক টেস্ট এর স্ক্রিনশটঃ
মাল্টিমিডিয়াঃ
এই ফোন এর মিউজিক এক্সপেরিয়েন্স মোটামুটি মানের । এই ফোন এ কোন ধরনের ল্যাগ ছাড়াই ফুল এইচডি ভিডিও প্লে-ব্যাক হয় । বিল্ট-ইন অডিও ও ভিডিও প্লেয়ার অনেকটা কাস্টমাইজড। ফলে ব্যবহারকারিরা নতুন কিছু ফিচার উপভোগ এর সুযোগ পাবেন ।
ক্যামেরাঃ
এই ফোনটিতে ৮ মেগাপিক্সেল এর রিয়ার ক্যামেরা ও ৫ মেগাপিক্সেল এর ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে।
চলুন দেখে নেয়া যাক এই ফোন এর ক্যমেরা দ্বারা তোলা কিছু ছবিঃ
এছাড়া এই ক্যামেরা দিয়ে ১০৮০ পিক্সেল রেজুলেশনের ফুল এইচডি ভিডিও রেকর্ড করা যাবে।
ওটিজি ও ওটিএঃ
এই ফোনে থাকছে ওটিজি সুবিধা,ফলে ব্যবহারকারি চাইলে মাউজ,কি-বোর্ড,পেনড্রাইভ প্রভৃতি ইনপুট ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন ।
তাছাড়া ফোনটিতে থাকছে ওভার দা ইয়ার আপডেট সুবিধা। যার ফলে ব্যবহারকারি কম্পিউটার সংযোগ ছাড়াই ডিভাইটি আপডেট করে নিতে পারবেন ।
কালারঃ দেশের বাজারে ফোনটি গোল্ডেল,সিলভার ও স্পেস গ্রে এই তিনটি কালারে পাওয়া যাচ্ছে।
#একনজরে এই ফোন এর কিছু ভাল দিকঃ
- সাশ্রয়ী মূল্য।
- মেটালিক ডিজাইন।
- ওটিজি ও ওটিএ সুবিধা থাকা।
- স্মুথ ইউজার ইন্টারফেস।
- সহজে বহনযোগ্য।
- দারূন ক্যামেরা পারফরমেন্স।
- ব্যাটারির সুপার পাওয়ার সেইভিং মোড।
#একনজরে এই ফোন এর কিছু সীমাবন্ধতাঃ
- লাউড স্পিকারের লাউডনেস কিছুটা কম ।
মূল্যঃ
দেশের বাজারে এই ফোন মাত্র ৬২৯০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তঃ
এন্ট্রি লেভেল স্মার্টফোন হিসেবে হয়ে উঠতে পারে স্বল্প বাজেটের ক্রেতাদের অন্যতম পছন্দ।