মেধাসত্ত্ব অধিকার সংরক্ষণে “ই-কপিরাইট” সুবিধা চালু সরকার

21
372

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এর যৌথ আয়োজনে “ই-কপিরাইট সেবা” এর উদ্বোধন করা হয়েছে। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এমপি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে আইসিটি ভিত্তিক এই সেবার উদ্বোধন করেন। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ইব্রাহীম হোসেন খান। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এর মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং এটুআই প্রোগ্রাম এর প্রকল্প পরিচালক জনাব কবির বিন আনোয়ার।

কপিরাইটের অফিস শুধুমাত্র ঢাকায় থাকায় সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে কপিরাইট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া কেবল ঢাকায় সম্ভব ছিল। আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা সম্পর্কে আবেদনকারীর কাছে তথ্য না থাকায় কাগজপত্র জমা দেয়ায় ভুল হত এবং একাধিকবার অফিসে আসতে হয়। এতে করে আবেদনকারীর খরচ ও যাতায়াত দুটোই বৃদ্ধি পেত। আবেদনের সব কাজ হাতে-কলমে সম্পন্ন হত বলে আবেদনকারীকে অনেক ভোগান্তির স্বীকার করতে হয়। এছাড়াও পূর্বে সনদপ্রাপ্ত কর্মের কোন প্রকার ডিজিটাল সংরক্ষণ ব্যবস্থা ছিল না বলে বাছাই প্রক্রিয়া ভুল হবার সম্ভাবনা রয়েই যেত।ইউএনডিপি এবং ইউএসএইড-এর কারিগরি সহায়তায় একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড-এর সহায়তায় “ই-কপিরাইট” সেবা ব্যবস্থা চালু করেছে যার মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের যেকোন জায়গা যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি সাহিত্যকর্ম, নাট্যকর্ম, সংগীতকর্ম, রেকর্ডকর্ম, শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র বিষয়ককর্ম, বেতার সম্প্রচার, টেলিভিশন সম্প্রচার, কম্পিউটার-সফটওয়্যারকর্ম ইত্যাদি নিবন্ধনের জন্যে সহজেই বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের ওয়েবসাইট -এ গিয়ে কপিরাইটের জন্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। প্রত্যেকটি আবেদন একটি স্বয়ংক্রিয় উপায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এসএমএস এর মাধ্যমে নোটিফিকেশন প্রদান করা হবে এবং নির্দিষ্ট তারিখে কপিরাইট সার্টিফিকেট বিতরণ করা হবে। প্রয়োজনে ই-সার্টিফিকেটও পাওয়া যেতে পারে যা পরবর্তীতে অনলাইনে যেকোনো সময় যাচাই করা যাবে।

দেখুন ওয়্যারলেস পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কিং করে কি ভাবে ল্যাপটপ থেকে ল্যাপটপে ফাইল ট্রান্সফার ও কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ নেয়া যায়

এই ই-সেবা ব্যবস্থা চালু করার ফলে কপিরাইট অফিস থেকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি নতুন দ্বার উম্মোচন হল। আশা করা যাচ্ছে এতে করে কপিরাইট এর জন্যে আবেদন বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে, এবং সৃজনশীল কর্মের নৈতিক ও আর্থিক অধিকার অর্থাৎ মালিকানা সংরক্ষণ আরও সহজ হবে। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ও এটুআই প্রোগ্রামকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন,“এই আধুনিক অনলাইন সিস্টেম তৈরি করার মাধ্যমে নাগরিকদের আরও দ্রুত সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব হবে”। এই ই-সেবা ব্যবস্থার প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।উল্লেখ্য, সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড এর মাধ্যমে নাগরিক সেবা সহজিকরণে অসংখ্য উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা থেকে বাছাই হয়ে সেবা প্রদানে সবচেয়ে বেশি উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাসমূহ স্বল্প আকারে স্বল্প সময়ে পাইলট প্রকল্প আকারে বাস্তবায়নের জন্যে সীমিত অনুদান পাচ্ছে। পাইলট শেষে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে উদ্ভাবনী সেবাটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্টার জাফর আর. চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার এবং এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি এ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, বেসিস ও এটুআই প্রোগ্রামের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

21 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here