আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পদ বিকাশের তাগিদ প্রযুক্তিবিদদের

4
475
বেসিসের সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেছেন, আইটি-এর অনস্বীকার্য ভবিষ্যত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এবং এই বিশ্ব আরও ভালো কিছুর জন্য পরিবর্তন হচ্ছে। বেসিস তার নীতিগত জায়গা থেকে আইওটি, এআই, রোবটিক্স এবং অনেক লেটেস্ট প্রযুক্তি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় আমরা প্রকল্পগুলোর উদ্যোগ গ্রহণ করবো, যাতে আমাদের স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা অনুধাবন করতে পারেন এবং এটি আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে একটি নিরাপদ অবস্থান অর্জন করতে সাহায্য করবে।
‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: দি নেক্সট বিগ থিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এবং বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা নিয়ে একটি গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজারের জনতা টাওয়ারে অবস্থিত সফ্টওয়্যার টেকনোলজি পার্কে সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং, প্রযুক্তি সেবা এবং আউটসোর্সিং কোম্পানি ই-জেনারেশন লিমিটেড।
ই- জেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন ই-জেনারেশন গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)-এর সাবেক এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এসএম আশরাফুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পলিসি অ্যাডভাইসর আনির চৌধুরী, ইউআইইউ-এর উপ-উপাচার্য ড. চৌধুরী মফিজুর রহমান, বুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, বিসিসি-এর পরিচালক (ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার) তারেক বরকতউল্লাহ এবং এনভিডিয়ার-এর ডিপ লার্নিং সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং আইবিএম-এর সাবেক মেশিন লার্নিং ডেভেলপার শেহজাদ নূর তাউস।
বক্তারা এই প্রযুক্তির বিভিন্ন ধরনের সুবিধা এবং এটিকে ব্যবহার করে কীভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় ও সমস্যা সমাধান করা যায় তা তুলে ধরেন। এছাড়া, বক্তারা ডিপ লার্নিং ভিত্তিক নতুন প্রযুক্তিসমূহ, আইওটি এবং সেন্সর নিয়েও কথা বলেন।
সভায় শামীম আহসান বলেন, এআই প্রযুক্তি বিভিন্ন সেক্টরে ব্যবহার করা যেতে পারে। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের বাংলাদেশী মেধাবী তরুণরা বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ই-জেনারেশনে আমরা বাংলার জন্য ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসর (এনএলপি) প্রস্তুত করছি, যা মেশিন লার্নিং এবং এআই এর সাথে সমন্বিত। যাইহোক, আমাদের জনগণকে এআই সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে অনুপস্থিত।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ টেক প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা ল্যাব চালু করেছে। সিলিকন ভ্যালিতে গবেষণা ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে চীনও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। আগামী বছরগুলোতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিং চালিত সম্ভাবনাময় ইন্টেলিজেন্ট ইকনোমি তৈরি করতে আমাদের যথাযথ পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। একাডেমিয়া, আইসিটি বিভাগ এবং এটুআই এর সহযোগিতায় ই-জেনারেশন এআই ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে এবং বাংলাদেশকে একটি এআই হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করবে।
এসএম আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এআই বাজারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য, কৃষি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, জাতীয় নিরাপত্তা, উৎপাদন কার্যক্রম এবং সেবা খাতে এআই ব্যবহারের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে, যা আমাদের অবশ্যই বিকশিত করতে হবে। সরকার, একাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সমন্বিত সহযোগিতায় বাংলাদেশকে এআই-এর গ্রহণযোগ্য ক্ষেত্র হিসেবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন, যা আমরা ইসরাইলে দেখতে পাই। সমন্বিত সহযোগিতার ফলেই ইসরাইল আজ সফল হয়েছে।
এই আলোচনা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। আমরা জীবনকে আরও সহজতর করতে যেসব টুলস, অ্যাপ, গ্যাজেট এবং সেবাসমূহ ব্যবহার করি সেগুলোর মূল উপকরণ হয়ে উঠেছে আর্টিফিশিয়ার ইন্টেলিজেন্স। এছাড়াও, আমাদের ব্যবসাগুলোতেও এটি পরিবর্তন আনছে। সাম্প্রতিক এআই গবেষণা বলছে, ৫৮% ব্যবসা এআই প্রযুক্তির, কিন্তু মাত্র ১২% এই প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে। এটি তাদের প্রতিযোগিদের সামনে এগিয়ে নিতে নতুনদের জন্য প্রচুর সুযোগ করে দিয়েছে।

4 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here