রাতুল দেবের কাজের ক্ষেত্রটা বেশ বড়। আন্তধর্ম সম্প্রীতি, সামাজিক উদ্যোগ, নারী অধিকার ও তরুণ নেতৃত্ব বিষয়ে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক রাতুল যে বিষয়ে পড়েছেন, কাজের ক্ষেত্র হিসেবে সে বিষয়টিই কেন বেছে নিলেন না? প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার মূল পড়ার বিষয় ছিল ব্যবসা। কিন্তু সামাজিক বিজ্ঞান, কলা আর বিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ে পড়তে হয়েছে। গণ্ডিটা বড় হয়েছে। সে জন্যই শুধু নিজের বিষয়ের মধ্যে আটকে যাইনি।’ রাতুল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্লোবাল মডেল ইউনাইটেড নেশনসের সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্বও পালন করেছেন। বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বিজনেস কমিউনিকেশনসের শাখা আছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাতুল এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পড়াশোনার পরিবেশটাই এমন। শিক্ষার্থীরা যে বিষয়েই পড়ুন না কেন, তাঁদের পৃথিবী অনেক বড়। ক্লাসরুম আর ক্লাসের বাইরে তাঁদের এমনভাবে গড়ে তোলা হয়, পেশাজীবনে তাঁরা বড় পরিসরে ভাবতে শেখেন।
একনজরে
২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। ১৬ বছর পেরিয়ে এখন ৬ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী, সব মিলিয়ে ৩২টি একাডেমিক প্রোগ্রামে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। মহাখালীতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কার্যক্রম। এ ছাড়াও সাভার বিরুলিয়ার ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের একটি সেমিস্টার পড়তে হয়। এই নিয়মকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে বলা হয় ‘রেসিডেনসিয়াল সেমিস্টার’। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে ঢাকার আফতাবনগরে তাদের মূল ক্যাম্পাস চালু হবে।
সামাজিক দক্ষতা যখন গুরুত্বপূর্ণ
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি কেন আলাদা? প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহজাবীন তানহা, আনিকা তাসনিম, সৈয়দ আশরাফুল করিম ও মাহির আশরাফ জামানের কাছ থেকে। তাঁরা বললেন রেসিডেনসিয়াল সেমিস্টারের কথা। সাভারের বিরুলিয়ায় ৯০ দিন কাটাতে হয় শিক্ষার্থীদের। সামাজিক দক্ষতা বিকাশ ও নেতৃত্ব তৈরিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় এই তিন মাসে। এ ছাড়া দায়িত্ববোধ, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও সৃজনশীলতা চর্চার সুযোগ তৈরি করতেই আবাসিক সেমিস্টার ব্যবস্থা। মাহজাবীন তানহা বলেন, ‘এই সময়টায় আমরা নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকি, নিজের কাজ নিজে করি। পাঠ্যবইয়ের পড়া তো সব বিশ্ববিদ্যালয়েই শেখানো হয়। সমাজে চলতে হলে যেসব সাধারণ দক্ষতা প্রয়োজন, আবাসিক সেমিস্টারে আমরা সেসব শিখি।’
বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেকটি শক্তির কথা বললেন আনিকা নওশীন। উন্নয়ন অধ্যয়ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার ঘুরে দেখতে গিয়ে আনিকার সঙ্গে পরিচয় হলো। বলছিলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও ব্র্যাক। ব্র্যাকের গড়া এই ইউনিভার্সিটিতে তাই উন্নয়ন অধ্যয়ন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ বেশি।’
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করতে নানা কার্যক্রম আছে ব্র্যাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবা ক্লাব শুধু যে ক্যাম্পাসেই সরব আছে তা নয়, ঢাকার কড়াইলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের দাবা খেলার সুযোগ করে দিচ্ছে তারা। প্রতি মাসেই নাচ-গান-নাটকের মতো কোনো না কোনো আয়োজন করছে বিভিন্ন ক্লাব। গিটার হাতে ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়া, সিঁড়ি কিংবা প্রাঙ্গণ (দোতলার খোলা বারান্দাটিকে শিক্ষার্থীরা বলেন ‘প্রাঙ্গণ’) মাতিয়ে রাখছেন কেউ কেউ।
গবেষণায় এগিয়ে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূচক অনুযায়ী গবেষণার ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে আছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, সেন্টার ফর এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ কন্ট্রোল অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন রিসার্চ সেন্টার, সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসসহ বেশ কিছু ইনস্টিটিউট আছে এখানে। এ ছাড়া প্রতিটি বিভাগেই গবেষণার প্রতি বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়। এ বছর ব্র্যাকের ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করেছে ফ্যাবরিকেশন ল্যাব। স্থাপত্য বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার সুযোগ আছে এই গবেষণাগারে।
শিক্ষকেরাও যেন পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণায় যুক্ত হন, সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের মান বাড়লে পড়াশোনার মান বাড়বেই। পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড আর নোটভিত্তিক ক্লাসরুমের ধারণা আমরা বদলে দিতে চেষ্টা করছি। ক্লাসরুমের বাইরের পৃথিবীটাকেও যেন শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম মনে করে, সে কারণে শিক্ষকদের ব্যবহারিক জ্ঞান ও দক্ষতা বিকাশের সুযোগ দিচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন গবেষণার কাজ করছেন ব্র্যাকের শিক্ষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ যেমন এখন নদী জাদুঘরের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। চট্টগ্রামে তৈরি হবে এই নদী জাদুঘর। শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করছেন কোংখাম পারিহান থৌইবা, দ্বৈত বনতুলশী, যারীন তাসনীম মাহবুব, আদনান মোর্শেদের মতো বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী।
উদ্যোগ ও সৃজনশীল সামাজিক বা ব্যবসায়িক ভাবনাকে উৎসাহ দিতে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে কাজ করছে সেন্টার ফর এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ (সিইডি)। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সিইডি, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, টাফটস ইউনিভার্সিটি ও ইয়েল স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিয়মিত আয়োজিত হচ্ছে ডিপ্রাইজ নামে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। সর্বশেষ আয়োজনে বিশ্বের অন্য সব দেশের আইডিয়াকে পেছনে ফেলে পুরস্কার জিতেছেন ব্র্যাকের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা। স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ভিডিও কনটেন্ট মডিউল তৈরির ভাবনা উপস্থাপন করে এ পুরস্কার পান তিনি।
সাফল্য থেকে অনুপ্রেরণা
খবরটা আলোড়ন ফেলেছিল পুরো দেশে। বাংলাদেশের প্রথম, নিজস্ব ক্ষুদ্রাকৃতির কৃত্রিম উপগ্রহ (ন্যানো স্যাটেলাইট) তৈরি হয়েছে ব্র্যাকের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে। এই কৃত্রিম উপগ্রহের নাম ‘ব্র্যাক অন্বেষা’। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর ক্যাম্পাস ভবনের ছাদে নির্মাণ করা হয়েছে এর ‘গ্রাউন্ড স্টেশন’। শুধু প্রযুক্তি বা প্রকৌশল খাতেই নয়, ব্যবসায়িক খাতের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে নিয়মিত পুরস্কার আসছে ব্র্যাকের ঘরে। সামাজিক ব্যবসাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হাল্ট প্রাইজের আঞ্চলিক পর্বে প্রথম হয়েছিলেন ব্র্যাকের একদল শিক্ষার্থী। এসব সাফল্যই বিশ্ববিদ্যালয়টির এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা।
সীমানা পেরিয়ে
নেপালের রঞ্জিতা যাদব, উগান্ডার বিসোবোকা ক্লায়ার, নানফুকা মিলের মতো বেশ কয়েকজন বিদেশি শিক্ষার্থী পড়ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধু বিদেশি শিক্ষার্থীরাই নন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অধ্যাপক আর শিক্ষাবিদেরা মাঝেমধ্যেই হাজির হন ব্র্যাকের ক্যাম্পাসে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেন। প্রতিটি সমাবর্তনেই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্নাতকদের সামনে কথা বলেন দেশ-বিদেশের গুণীজনেরা। ভিনদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে বেশ কিছু গবেষণা করছে ব্র্যাক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউসি বার্কলি, পেনস্টেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও গবেষণা আদান-প্রদানের সুযোগ আছে এখানে।
অধ্যাপক সৈয়দ সাদ আন্দালিব, উপাচার্য, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও সামাজিমনন-দক্ষতা বিকাশকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এখানে গবেষণার সুযোগ কম থাকলেও আমাদের প্রচেষ্টায় কোনো কমতি নেই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টা ও সাফল্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে। যত বেশি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার সুযোগ ও জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগের সুযোগ মিলবে, ততই আমরা সামনে এগিয়ে যাব। আমরা হয়তো ক্যালটেক কিংবা এমআইটি হতে পারব না, কিন্তু আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব যাঁরা দেবেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের তৈরি করতে ভীষণভাবে সচেতন। আন্তর্জাতিক মানের কথা মাথায় রেখে সেভাবেই আমাদের বিভিন্ন কোর্স ও পড়াশোনার ধরন সাজানো হয়েছে।
order lipitor 40mg sale oral atorvastatin 10mg atorvastatin pill
buy ciprofloxacin cheap – buy generic myambutol 600mg augmentin pill
purchase baycip for sale – buy augmentin 375mg online cheap order generic augmentin 375mg
pill retrovir 300 mg – allopurinol 300mg uk
buy clozaril no prescription – purchase quinapril for sale order famotidine online cheap
quetiapine sale – sertraline order eskalith where to buy
buy clomipramine 50mg for sale – purchase paroxetine online cheap purchase sinequan online cheap
buy generic atarax 10mg – amitriptyline sale endep for sale
clavulanate for sale – buy generic ciprofloxacin 500mg cipro 500mg canada
amoxil pills – cefuroxime 500mg usa cipro where to buy
purchase azithromycin for sale – buy ciprofloxacin 500 mg without prescription ciplox pills