অবশেষে জিতল মানুষ! ‘গো’ নামের খেলায় গুগলের ডিপমাইন্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম ‘আলফাগো’কে হারিয়েছেন এই খেলায় কিংবদন্তি খেলোয়াড় লি সিডল। এর আগে এই লি-ই পর পর তিন ম্যাচে হেরে যান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রোগ্রাম আলফাগোর কাছে।
হ্যাটট্রিক হারের পর চতুর্থ ম্যাচে এসে জয় পেয়ে লি এই জয়কে ‘অমূল্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের সর্বশেষ ম্যাচ হবে আগামী মঙ্গলবার।
ম্যাচের ধারাভাষ্যকার মাইকেল রেডমন্ড বলেন, খেলার মাঝামাঝি পর্যায় পর্যন্ত দারুণ খেলছিল আলফাগো। তবে এরপর অসাধারণ খেলে ম্যাচ জিতে নেন লি।
লি অবশ্য বলছেন, ‘আমাকে এত বেশি বাহবা দেওয়ার কিছু নেই। একটি মাত্র ম্যাচ জিতেছি আমি।’
খেলায় উপস্থিত গুগলের প্রতিনিধিরা বলছেন, আলফাগোর এই পরাজয় ‘অত্যন্ত মূল্যবান’। তাঁরা একটি সমস্যা শনাক্ত করেছেন, তা সমাধানের চেষ্টা করছেন।
গো নামের চীনা বোর্ড গেমটি আমাদের দেশের ষোলোগুটি বা বাঘবন্দী খেলার মতো। একটা নির্দিষ্ট বোর্ডে সাদা ও কালো গুটি নিয়ে দুই পক্ষকে খেলতে হয়। উদ্দেশ্য থাকে প্রতিদ্বন্দ্বীর গুটিকে আটকে ফেলে বোর্ডের দখল নেওয়া। যে অর্ধেকের বেশি এলাকা দখল করতে পারবে, সে-ই বিজয়ী। প্রায় তিন হাজার বছর আগে চীনে এই খেলাটির উদ্ভব। দাবা খেলার সঙ্গে এর বড় পার্থক্য হচ্ছে, এখানে প্রায় অসংখ্য সম্ভাবনাময় চাল থাকে। কেবল গাণিতিক হিসাব করে সেরা চালটি বের করা প্রায় অসম্ভব। এ কারণে কম্পিউটারের জন্য এই খেলাটি মোটেই সহজ হবে না বলে এত দিন মনে করা হয়েছে।
গুগলের ডিপমমাইন্ড নামের ইউনিটে তৈরি করা হয় আলফাগো প্রোগ্রামটি। এতে দুইটি নিউরাল নেটওয়ার্ক আছে। এর পলিসি নেটওয়ার্কটি সম্ভাব্য সেরা চালটি দ্রুত হিসাব করতে পারে। অন্যদিকে এর ভ্যালু নেটওয়ার্কটি প্রতিটি চালের শুরুতে অপ্রয়োজনীয় চালগুলো বাদ দিয়ে সম্ভাব্য চালের পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। বিস্তারিত ‘হিসাব’ না করে ‘অপ্রয়োজনীয় চাল’ বাদ দেওয়াটা এত দিন পর্যন্ত মানুষের একচেটিয়া সম্পত্তি ছিল। কিন্তু গুগলের আলফাগো সে সক্ষমতা অর্জন করে।